২০১২ সালে ‘ভালোবাসার রং’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে মাহিয়া মাহির। বেশ কয়েক বছর ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। বিয়ের পর মাহির চলচ্চিত্রে অভিনয় কমে যায়। গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ রাকিব সরকারের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের পর রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১টা ৪১ মিনিটে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তা দিয়ে তার সিনেমা থেকে সরে আসার কারণ জানান তিনি।
ভিডিও বার্তায় এই অভিনেত্রী বলেন, ‘রকিবের সঙ্গে আমার প্রেম হয়নি। রকিবের সঙ্গে দুই মাসের পরিচয়ে দু‘জনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা বিয়ে করবো। সে তখন তো আমার রাগ, ইগো অথবা আরও যেসব সমস্যা আছে সেই সম্পর্কে বুঝে নি; কখনো দেখেও নি। বিয়ে করার পর দেখেছে। রকিবের তো একই অবস্থা। ওর যেসব সমস্যা আছে। এগুলো তো আমি পরে বুঝেছি। মানুষ মাত্রই সমস্যা থাকবে। আমরা যখন একসঙ্গে থাকব, তখন আমাদের চোখে সবই ভালো লাগবে। কিন্তু যখন সম্পর্ক থাকবে না, তখন আবার দুজন দুজনার শত্রু হবো। এই ধরনের মানুষ আমি আর রকিব না। রকিব আমার জীবন থেকে অতীত হয়ে গেছে। আমি তার জীবন থেকে অতীত হয়ে গেছি।’
ভিডিওতে মাহি বলেন, এই জীবনের প্রথমবার বারবার ভিডিও দিচ্ছি। সরি-বারবার না, একবারই ভিডিও দিয়েছি। এটা আবার রিপিট দিচ্ছি। আমার ১২ বছরের ক্যারিয়ারে কোনো দিনই এমন হয় নাই। আমার কাছে খুব ইমব্যারিজিং এই বিষয়টা। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে যে, আমি যদি সবার সঙ্গে কথা বলি তাহলে এটা আবার অন্যরকমভাবে প্রেজেন্ট হতে পারে। কারো সঙ্গে কথা হলো, কারও সঙ্গে কথা হলো না-তাহলে আমার সাংবাদিক ভাইয়েরা মন খারাপ করতে পারে। এজন্য মনে হলো একটা ভিডিও বাইট দেই।
মাহিয়া মাহি বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আমার সম্পর্কে আপনাদের ধারণা নাই? আপনারা আপনার এই ছোট বোনটাকে চেনেন না? দীর্ঘদিন আমরা একই ফিল্ডে কাজ করতেছি। এখানে কে কি করে আপনারা প্রত্যেকে তা জানেন। আপনারা জানেন না মিডিয়া ভিত্তিক আমার কোন ফ্রেন্ড নাই? মিডিয়া ভিত্তিক কোনো আড্ডায় আমাকে কেউ কখনো দেখে নাই, কোনো দিনই দেখে নাই। আমার কিছু ফ্রেন্ড আছে, ছোট বেলায় একসঙ্গে পড়ালেখা করতাম, এই কয়েকজন আমার ফ্রেন্ড।
চিত্রনায়িকা মাহি বলেন, যখন মন খারাপ হয়, তখন তাদের সঙ্গেই ঘুরতে যাই, আড্ডা দেই, তাদের সঙ্গে গল্প করি। আমি যখন কিছুই ছিলাম না, সেই গ্যাদা মাহি। তখন থেকেই তারা আমার সঙ্গে ছিল। আমার মনে হয় তারা আমার মন খারাপের সময় পাশে থাকলে ভালো লাগবে। সুতরাং আমাকে কোনো পার্টিতে, গেট-টুগেদারে এমনকি মিডিয়া রিলেটেড প্রোগ্রামগুলোতেও আমাকে দেখা যায় না। এজন্য আমাকে আপনারা বলেন, মাহি এটা প্রফেশনাল না।
মাহি তার সাবেক স্বামী রাকিব সম্পর্কে বলেন, রাকিব আমার সাবেক স্বামী ছিলেন, রাকিব সরকার আমার ভালোবাসার মানুষ ছিলেন। আমি তাকে ভালোবাসছি। অল্প না, অনেক ভালোবাসছি। যার কারণে আমি সিনেমা থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। কেন গিয়েছি, কারণ তিনি তা পছন্দ করতেন না। সে আমাকে কখনো বলে নাই যে তুমি সিনেমা করতে পারবে না। আমার মনে হয়েছে যে ওরে এটা (সিনেমা) পছন্দ না। আমি এজন্য সিনেমা থেকে সরে গিয়েছিলাম। এই লেভেলের ভালো তাকে বাসতাম।
চিত্রনায়িকা বলেন, ও (রাকিব) ফেসবুকে কি লিখলো, কি লিখলো না সেটা আমার কিছু না, আমি ‘ডন্ট কেয়ার’। আমার পেটের মধ্যে বোমা মারলেও, আমার মাথায় পিস্তল ধরলেও আমি রাকিবের ব্যাপারে খারাপ কিছু বলতে পারব না। আমি তাকে সম্মান করি এবং এটা মৃত্যু পর্যন্ত থাকবে। ওর কি কোনো নেগেটিভ সাইট নাই? দুইটা মানুষ প্রেম করার সময় বোঝা যায় না কার কি প্রবলেম। বিয়ের হলে বোঝা যায় কার কি প্রবলেম।
এ সময় সাংবাদিক ও ভক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো গান ভালো লাগলে সেটা ফেসবুকে লিখি, কোনো সিনেমা দেখলে ডায়লগ ভালো লাগলে সেটা ফেসবুকে লিখি, সেজন্য আমার মন খারপ এমন নয়। তবে হ্যাঁ, দীর্ঘদিনের এক সম্পর্ক থেকে বের হয়ে এসেছি সেজন্য মন খারাপ। তবে এটা নিয়ে যেভাবে নিউজ হচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন আমি দ্বারে দ্বারে ঘুরতেছি। না, আমার কাউকে লাগবে না। আমার ফারিশ আছে। আমি তাকে নিয়েই ভালো আছি।’