Dhaka ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাগর থেকে তেল সরবরাহের নতুন যুগে বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানি খালাস এখন আর কোনো স্বপ্ন নয়, একেবারেই বাস্তব। সাগর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সমতলে জ্বালানি তেল সরবরাহের নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ডিসেম্বরে এই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের কমিশনিংয়ের পর চলতি সপ্তাহে চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক তেল সরবরাহ। এর মাধ্যমে মহেশখালীর কালারমারছড়ার স্টোরেজ ট্যাংক থেকে পাইপলাইনে ১১৫ কিলোমিটার দূরে জ্বালানি পরিবহন শুরু হয়েছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। সরাসরি মাদার ভেসেল থেকে তেল খালাস হওয়ায় সময় এবং বিশাল অংকের টাকা বাঁচবে বলছেন বিপিসি চেয়ারম্যান। তবে স্পর্শকাতর এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে দেশে আমদানিকৃত পরিশোধিত বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সাগরে বড় জাহাজ থেকে বিভিন্ন ছোট ট্যাংকারে করে খালাস করা হয়। এরপর এসব জ্বালানি প্রয়োজন অনুসারে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি বা বিভিন্ন স্টোরেজ ট্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। এক্ষেত্রে একটি জাহাজ থেকে তেল খালাসে সময় লাগে ১২-১৪ দিন। গতানুগতিক এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় সমুদ্র থেকে সরাসরি পাইপলাইনে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৫ সালে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বা এসপিএম প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তিন দফা সংশোধনীর পর এই প্রকল্প শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে। এরইমধ্যে প্রকল্পের প্রথম অংশে সাগরে স্থাপিত মুরিংয়ের মাধ্যমে জাহাজ থেকে তেল খালাস করে পরীক্ষামূলকভাবে নেওয়া হয়েছে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে। দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার মহেশখালী স্টোরেজ থেকে পাম্প করে এসব জ্বালানি নিয়ে আসা হচ্ছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। এখন এসপিএম-এর কারণে তেল খালাসে ১২-১৪ দিনের জায়গায় সময় লাগবে মাত্র দু’দিন ।

প্রথম অংশের কমিশনিংয়ের সময় মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে ৮৩ হাজার টন ক্রুড অয়েল এবং ৬০ হাজার টন ডিজেল মজুদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও ৯ মার্চ আলাদাভাবে এসব জ্বালানি চট্টগ্রামে আনার পরিকল্পনা রয়েছে জ্বালানি বিভাগের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পর্শকাতর এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবচে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

এই প্রকল্পে মহেশখালী উপকূল থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে এসপিএম স্থাপন করা হয়েছে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল ও ডিজেল খালাস হচ্ছে। ১৬ কিলোমিটার পাইপলাইনে তেল প্রথমে নিয়ে আসা হয় কালারমার ছড়ায় সিএসটিএফ-এ। সেখান থেকে পাম্পের মাধ্যমে ১১৫ কিলোমিটার পাইপলাইনে তেল আসছে ইআরএলে। প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাগর থেকে তেল সরবরাহের নতুন যুগে বাংলাদেশ

আপডেট : ০৫:৩৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানি খালাস এখন আর কোনো স্বপ্ন নয়, একেবারেই বাস্তব। সাগর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সমতলে জ্বালানি তেল সরবরাহের নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ডিসেম্বরে এই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের কমিশনিংয়ের পর চলতি সপ্তাহে চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক তেল সরবরাহ। এর মাধ্যমে মহেশখালীর কালারমারছড়ার স্টোরেজ ট্যাংক থেকে পাইপলাইনে ১১৫ কিলোমিটার দূরে জ্বালানি পরিবহন শুরু হয়েছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। সরাসরি মাদার ভেসেল থেকে তেল খালাস হওয়ায় সময় এবং বিশাল অংকের টাকা বাঁচবে বলছেন বিপিসি চেয়ারম্যান। তবে স্পর্শকাতর এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে দেশে আমদানিকৃত পরিশোধিত বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সাগরে বড় জাহাজ থেকে বিভিন্ন ছোট ট্যাংকারে করে খালাস করা হয়। এরপর এসব জ্বালানি প্রয়োজন অনুসারে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি বা বিভিন্ন স্টোরেজ ট্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। এক্ষেত্রে একটি জাহাজ থেকে তেল খালাসে সময় লাগে ১২-১৪ দিন। গতানুগতিক এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় সমুদ্র থেকে সরাসরি পাইপলাইনে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৫ সালে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বা এসপিএম প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তিন দফা সংশোধনীর পর এই প্রকল্প শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে। এরইমধ্যে প্রকল্পের প্রথম অংশে সাগরে স্থাপিত মুরিংয়ের মাধ্যমে জাহাজ থেকে তেল খালাস করে পরীক্ষামূলকভাবে নেওয়া হয়েছে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে। দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার মহেশখালী স্টোরেজ থেকে পাম্প করে এসব জ্বালানি নিয়ে আসা হচ্ছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। এখন এসপিএম-এর কারণে তেল খালাসে ১২-১৪ দিনের জায়গায় সময় লাগবে মাত্র দু’দিন ।

প্রথম অংশের কমিশনিংয়ের সময় মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে ৮৩ হাজার টন ক্রুড অয়েল এবং ৬০ হাজার টন ডিজেল মজুদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও ৯ মার্চ আলাদাভাবে এসব জ্বালানি চট্টগ্রামে আনার পরিকল্পনা রয়েছে জ্বালানি বিভাগের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পর্শকাতর এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবচে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

এই প্রকল্পে মহেশখালী উপকূল থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে এসপিএম স্থাপন করা হয়েছে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল ও ডিজেল খালাস হচ্ছে। ১৬ কিলোমিটার পাইপলাইনে তেল প্রথমে নিয়ে আসা হয় কালারমার ছড়ায় সিএসটিএফ-এ। সেখান থেকে পাম্পের মাধ্যমে ১১৫ কিলোমিটার পাইপলাইনে তেল আসছে ইআরএলে। প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।