ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪১৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গ্যাসের দাম বাড়ানোর দুই দিনের মাথায় বিদ্যুতের দর বাড়িয়েছে সরকার। ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন মূল্য কার্যকর হবে। তবে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এই মূল্য সমন্বয় গ্রাহকদের জন্য সহনীয় হবে বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুতের দর বাড়ানোর ঘোষণা দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ০৭৪ শতাংশ। এতে প্রতি ইউনিটের গড় দর স্থির হয়েছে ৭ টাকা ০৪ পয়সায়। আগে যা ছিল ৬ টাকা ৭০ পয়সা। পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তাতে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের গড় দাম নিষ্পত্তি হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। আগে তা ছিল ৮ টাকা ২৫ পয়সা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে এ মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।

সব বিতরণ কোম্পানির ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি লাইনের জন্য পাইকারি বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৮ টাকা ৪৪ পয়সা এবং ৮ টাকা ৪৭ পয়সা। এর বাইরে ৩৩ কেভি লাইনের জন্য পিডিবির বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ টাকা ৬২ পয়সা, আরইবির ক্ষেত্রে ৬ টাকা ২৩ পয়সা, ডিপিডিসির ৮ টাকা ৫৬ পয়সা, ডেসকো ৮ টাকা ৫৮ পয়সা, ওয়েস্টজোনের ক্ষেত্রে ৭ টাকা ৪৬ পয়সা এবং নেসকোর ৭ টাকা ৪ পয়সা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, এখন বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ পড়ছে ১২ টাকার মতো, আর বিক্রি করা হচ্ছে ৭ টাকায়। চলতি বছর বিদ্যুতে ৪৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ধীরে ধীরে কয়েক বছর ধরে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। কম ব্যবহারকারী গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম কম বাড়বে, আর উপরের দিকে বেশি বাড়বে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায়। তেল-গ্যাস ও কয়লার আন্তর্জাতিক বাজারদর ক্ষেত্র বিশেষে একই থাকলেও আগের চেয়ে ডলারপ্রতি ৪০ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। এখানেই বিশাল গ্যাপ তৈরি হয়েছে। ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য কাজ করছি।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দামে আধুনিক প্রাইসিংয়ে যাচ্ছি। ইনডেক্স ও ফর্মুলা করা হয়েছে, প্রতিমাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দাম সমন্বয় হবে, প্রতিবেশী দেশও প্রতিদিন সমন্বয় করে। সেখানে অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার অন্যভাবে সহায়তা করে।

বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হচ্ছে, সে কারণে কিছুটা সমন্বয় করা হচ্ছে। আমরা তো খরচ উঠাতে চাচ্ছি। এখন গ্রাহকরা যদি একটু সাশ্রয়ী হন, তাহলে বিল আগের অবস্থায় থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে— গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিটের দাম ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৩৫ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিটের দাম ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৬৩ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৯৫ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৩৪ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের দাম ১০ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১ টাকা ৫১ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের দাম ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অধ্যাদেশ ২০২২ সংশোধনের কারণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পায় সরকার। ওই অধ্যাদেশের আওতায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিলো বিদ্যুৎ বিভাগ।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

আপডেট সময় : ০৫:৩২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

গ্যাসের দাম বাড়ানোর দুই দিনের মাথায় বিদ্যুতের দর বাড়িয়েছে সরকার। ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন মূল্য কার্যকর হবে। তবে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এই মূল্য সমন্বয় গ্রাহকদের জন্য সহনীয় হবে বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুতের দর বাড়ানোর ঘোষণা দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ০৭৪ শতাংশ। এতে প্রতি ইউনিটের গড় দর স্থির হয়েছে ৭ টাকা ০৪ পয়সায়। আগে যা ছিল ৬ টাকা ৭০ পয়সা। পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তাতে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের গড় দাম নিষ্পত্তি হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। আগে তা ছিল ৮ টাকা ২৫ পয়সা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে এ মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।

সব বিতরণ কোম্পানির ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি লাইনের জন্য পাইকারি বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৮ টাকা ৪৪ পয়সা এবং ৮ টাকা ৪৭ পয়সা। এর বাইরে ৩৩ কেভি লাইনের জন্য পিডিবির বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ টাকা ৬২ পয়সা, আরইবির ক্ষেত্রে ৬ টাকা ২৩ পয়সা, ডিপিডিসির ৮ টাকা ৫৬ পয়সা, ডেসকো ৮ টাকা ৫৮ পয়সা, ওয়েস্টজোনের ক্ষেত্রে ৭ টাকা ৪৬ পয়সা এবং নেসকোর ৭ টাকা ৪ পয়সা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, এখন বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ পড়ছে ১২ টাকার মতো, আর বিক্রি করা হচ্ছে ৭ টাকায়। চলতি বছর বিদ্যুতে ৪৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ধীরে ধীরে কয়েক বছর ধরে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। কম ব্যবহারকারী গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম কম বাড়বে, আর উপরের দিকে বেশি বাড়বে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায়। তেল-গ্যাস ও কয়লার আন্তর্জাতিক বাজারদর ক্ষেত্র বিশেষে একই থাকলেও আগের চেয়ে ডলারপ্রতি ৪০ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। এখানেই বিশাল গ্যাপ তৈরি হয়েছে। ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য কাজ করছি।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দামে আধুনিক প্রাইসিংয়ে যাচ্ছি। ইনডেক্স ও ফর্মুলা করা হয়েছে, প্রতিমাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দাম সমন্বয় হবে, প্রতিবেশী দেশও প্রতিদিন সমন্বয় করে। সেখানে অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার অন্যভাবে সহায়তা করে।

বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হচ্ছে, সে কারণে কিছুটা সমন্বয় করা হচ্ছে। আমরা তো খরচ উঠাতে চাচ্ছি। এখন গ্রাহকরা যদি একটু সাশ্রয়ী হন, তাহলে বিল আগের অবস্থায় থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে— গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিটের দাম ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৩৫ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিটের দাম ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৬৩ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৯৫ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৩৪ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের দাম ১০ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১ টাকা ৫১ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের দাম ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অধ্যাদেশ ২০২২ সংশোধনের কারণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পায় সরকার। ওই অধ্যাদেশের আওতায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিলো বিদ্যুৎ বিভাগ।