ঢাকা ১২:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শুরু হলো অগ্নিঝরা মার্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪
  • / ৩৯১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ মার্চ মাস থেকেই শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ।

অগ্নিঝরা মার্চ— বাঙালির স্বপ্নসাধ যৌক্তিক পরিণতির মাস। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয়।

পাকিস্তানের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন, বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘদিন ধরে বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম চলতে থাকে। আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের মার্চে এসে উপনীত হয়। গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলরত বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে এ মাসেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গণহত্যা শুরু করে।

এর আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় পাকিস্তানি জান্তা।

২ মার্চ প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল ঐতিহাসিক সমাবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন। এ ভাষণেই তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে নির্দেশ দেন।

এদিকে শাসক গোষ্ঠী আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করতে থাকে আর ভেতরে ভেতরে বাঙালির ওপর আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞ চলানোর প্রস্তুতি নিতে থাকে। প্রহসনের আলোচনা করতে সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৫ মার্চ ঢাকায় আসেন। আর আগেই বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।

১৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইয়াহিয়া আলোচনা শুরু করেন। আলোচনা চলতে থাকে। এর মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সভা সমাবেশ চলতে থাকে। ৭১ এর মার্চের প্রতিটি দিনই ছিল সভা-সমাবেশ আর প্রতিবাদমুখর অগ্নিঝরা দিন।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের নির্দেশ অনুসরণ করে পূর্ব বাংলার মানুষ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান বাঙালি নিধনের নির্দেশ দিয়ে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন।

অপারেশন সার্চলাইটের নামে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘুমন্ত ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

ওই রাতেই অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার নির্দেশ দেন।

বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে পকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন থেকেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

শুরু হলো অগ্নিঝরা মার্চ

আপডেট সময় : ০৬:২৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ মার্চ মাস থেকেই শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ।

অগ্নিঝরা মার্চ— বাঙালির স্বপ্নসাধ যৌক্তিক পরিণতির মাস। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয়।

পাকিস্তানের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন, বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘদিন ধরে বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম চলতে থাকে। আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের মার্চে এসে উপনীত হয়। গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলরত বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে এ মাসেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গণহত্যা শুরু করে।

এর আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় পাকিস্তানি জান্তা।

২ মার্চ প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল ঐতিহাসিক সমাবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন। এ ভাষণেই তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে নির্দেশ দেন।

এদিকে শাসক গোষ্ঠী আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করতে থাকে আর ভেতরে ভেতরে বাঙালির ওপর আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞ চলানোর প্রস্তুতি নিতে থাকে। প্রহসনের আলোচনা করতে সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৫ মার্চ ঢাকায় আসেন। আর আগেই বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।

১৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইয়াহিয়া আলোচনা শুরু করেন। আলোচনা চলতে থাকে। এর মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সভা সমাবেশ চলতে থাকে। ৭১ এর মার্চের প্রতিটি দিনই ছিল সভা-সমাবেশ আর প্রতিবাদমুখর অগ্নিঝরা দিন।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের নির্দেশ অনুসরণ করে পূর্ব বাংলার মানুষ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান বাঙালি নিধনের নির্দেশ দিয়ে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন।

অপারেশন সার্চলাইটের নামে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘুমন্ত ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

ওই রাতেই অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার নির্দেশ দেন।

বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে পকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন থেকেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়।