বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে জরুরি বহির্গমন কিংবা অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ভবন মালিককে কয়েকবার নোটিশ দেয়ার মাধ্যমে সতর্ক করা হলেও কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যে বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
শনিবার (২ মার্চ) সকালে ভবন পরিদর্শনে আসেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রতিনিধি দল। ভবন তদারকির দায়িত্বে থাকা সংস্থার গাফিলতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালী বলেন, এই ভবনে যারা ব্যবসা করতে এসেছেন তারা কি কোনো সার্টিফিকেট ছাড়া এসেছেন? সার্টিফিকেটগুলো কীভাবে পেয়েছেন? যারা ব্যবসা করতে এসেছেন তাদের সার্টিফিকেটগুলো যারা দেন তারা এতদিন কি করেছেন?
তিনি বলেন, আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে আগাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের শৃঙ্খলাগুলো রক্ষা করা হচ্ছে না। এটা সমুন্নতভাবে রক্ষা করতে হবে। এখন দোষাদোষী করে সামনে আগানোর সময় নেই। এক একটা করে দুর্ঘটনা ঘটছে এবং দুর্ঘটনা ঘটার পর আমরা একে দোষ দিচ্ছি, ওকে দোষ দিচ্ছি। একটা দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের কার কী দোষ সেগুলো বের করি, সেটা না করে যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্যে আসতে হবে। এই ঘটনা কিন্তু ম্যান ক্রিয়েটেড। আমাদের এখানে কিন্তু ন্যাচারাল ডিজাস্টার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমি মনে করি সেগুলোর প্রস্তুতি এখন থেকেই নেওয়া উচিত।
আমিন হেলালী বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজন সুস্থ পরিবেশ। এটার জন্য সরকারের বিভিন্ন রেগুলেটরির দায়িত্ব আছে। ব্যবসায়ীদের কাজ হল ব্যবসা করা। তাদের জন্য সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা সরকারের কাজ, বিভিন্ন অধিদপ্তরের কাজ। এখন তাদেরকে দোষী করার সময় নেই। যার যে দুর্বলতা আছে সেটাকে আইডেন্টিফাই করে আর যেন এমন দুর্ঘটনায় পতিত না হতে হয় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেই জায়গায় আমাদেরকে অবস্থান নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুড়ে যাওয়া রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবন জুড়েই ছিল খাবার ও কাপড়ের দোকান। আধুনিক সব খাবার দোকান আর নামীদামী ব্রান্ডের বিপণি বিতান থাকায় ভবনটি সর্বদা কোলাহলপূর্ণ থাকতো। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত ১১ জনের মধ্যে ৬ জন সুস্থ হয়েছেন।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ মামলায় এরই মধ্যে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র। এছাড়া ঘটনার পর থেকে পালিয়ে থাকা ভবনের মালিককেও খুঁজছে পুলিশ।