ঢাকা ১২:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাগর থেকে তেল সরবরাহ, বছরে সাশ্রয় ৮০০ কোটি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৯৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাগর থেকে পাইপ লাইনে সমতলে জ্বালানি তেল সরবরাহের নতুন যুগে বাংলাদেশ। দক্ষিন এশিয়ায় সর্বপ্রথম সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং ব্যবহারের মাধ্যমে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক থেকে পাইপলাইনে ১১৫ কিলোমিটার দূরে জ্বালানি পরিবহন শুরু হয়েছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারীতে। মাদার ভেসেল থেকে তেল খালাসে সময় আর খরচ বাঁচবে, মনে করে সংশ্লিষ্টরা।

মহেশখালী থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল) তেল আসতে সময় লেগেছে ৩০ ঘণ্টা। ২৯ ফেব্রুয়ারি পাইপলাইনের মাধ্যমে সকাল ৮টায় মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনাল থেকে পাম্প শুরু হয়।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ইস্টার্ন রিফাইনারির ৪০ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার ট্যাংক টার্মিনালে তেল পৌঁছায়। সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে আপাতত মহেশখালী থেকে পাইপলাইনের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আনা হচ্ছে। এরপর ক্রুড অয়েল দিয়ে একইভাবে পাইপলাইন পরীক্ষা করা হবে। সফল হলে পরবর্তীতে পুরোদমে চালু করা হবে এ প্রকল্প।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে একটি জাহাজ থেকে লাইটারিংয়ের মাধ্যমে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ থেকে ২০ দিন লাগে। পাইপলাইনের মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন হবে মাত্র দুদিনে। এতে সময় ও খরচ দুটোই সাশ্রয় হবে। পুরোদমে পাইপলাইনে তেল সরবরাহ শুরু হলে প্রতি বছর জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হবে ৮০০ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় নতুন যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।

দেশে আমদানি করা পরিশোধিত বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সাগরে বড় জাহাজ থেকে খালাস করা হয় বিভিন্ন ছোট ট্যাংকারে। এরপর নেয়া হয় চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি বা বিভিন্ন স্টোরেজ ট্যাংকে। এতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ দিন। সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় সমুদ্র থেকে সরাসরি পাইপলাইনে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৫ সালে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বা এসপিএম প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ জানান, তিন দফা সংশোধনীর পর এই প্রকল্প শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে। এরই মধ্যে জাহাজ থেকে তেল খালাস করে পরীক্ষামূলকভাবে নেয়া হয়েছে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে। দ্বিতীয় ধাপে মহেশখালী স্টোরেজ থেকে পাম্প করে এসব জ্বালানি নিয়ে আসা হচ্ছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। সময় লাগবে মাত্র দু’দিন ।

চুয়েটের পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়া জানান, প্রথম অংশের কমিশনিংয়ের সময় মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে ৮৩ হাজার টন ক্রুড অয়েল এবং ৬০ হাজার টন ডিজেল মজুদ করা হয়েছে। ৯ মার্চ এসব জ্বালানি চট্টগ্রামে আনার পরিকল্পনা জ্বালানি বিভাগের। স্পর্শকাতর এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই প্রকল্পে মহেশখালী উপকূল থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে এসপিএম স্থাপন করা হয়েছে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল ও ডিজেল খালাস হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ছয়হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে আটশ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাগর থেকে তেল সরবরাহ, বছরে সাশ্রয় ৮০০ কোটি

আপডেট সময় : ১০:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

সাগর থেকে পাইপ লাইনে সমতলে জ্বালানি তেল সরবরাহের নতুন যুগে বাংলাদেশ। দক্ষিন এশিয়ায় সর্বপ্রথম সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং ব্যবহারের মাধ্যমে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক থেকে পাইপলাইনে ১১৫ কিলোমিটার দূরে জ্বালানি পরিবহন শুরু হয়েছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারীতে। মাদার ভেসেল থেকে তেল খালাসে সময় আর খরচ বাঁচবে, মনে করে সংশ্লিষ্টরা।

মহেশখালী থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল) তেল আসতে সময় লেগেছে ৩০ ঘণ্টা। ২৯ ফেব্রুয়ারি পাইপলাইনের মাধ্যমে সকাল ৮টায় মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনাল থেকে পাম্প শুরু হয়।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ইস্টার্ন রিফাইনারির ৪০ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার ট্যাংক টার্মিনালে তেল পৌঁছায়। সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে আপাতত মহেশখালী থেকে পাইপলাইনের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আনা হচ্ছে। এরপর ক্রুড অয়েল দিয়ে একইভাবে পাইপলাইন পরীক্ষা করা হবে। সফল হলে পরবর্তীতে পুরোদমে চালু করা হবে এ প্রকল্প।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে একটি জাহাজ থেকে লাইটারিংয়ের মাধ্যমে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ থেকে ২০ দিন লাগে। পাইপলাইনের মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন হবে মাত্র দুদিনে। এতে সময় ও খরচ দুটোই সাশ্রয় হবে। পুরোদমে পাইপলাইনে তেল সরবরাহ শুরু হলে প্রতি বছর জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হবে ৮০০ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় নতুন যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।

দেশে আমদানি করা পরিশোধিত বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সাগরে বড় জাহাজ থেকে খালাস করা হয় বিভিন্ন ছোট ট্যাংকারে। এরপর নেয়া হয় চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি বা বিভিন্ন স্টোরেজ ট্যাংকে। এতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ দিন। সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় সমুদ্র থেকে সরাসরি পাইপলাইনে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৫ সালে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বা এসপিএম প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ জানান, তিন দফা সংশোধনীর পর এই প্রকল্প শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে। এরই মধ্যে জাহাজ থেকে তেল খালাস করে পরীক্ষামূলকভাবে নেয়া হয়েছে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে। দ্বিতীয় ধাপে মহেশখালী স্টোরেজ থেকে পাম্প করে এসব জ্বালানি নিয়ে আসা হচ্ছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। সময় লাগবে মাত্র দু’দিন ।

চুয়েটের পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়া জানান, প্রথম অংশের কমিশনিংয়ের সময় মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে ৮৩ হাজার টন ক্রুড অয়েল এবং ৬০ হাজার টন ডিজেল মজুদ করা হয়েছে। ৯ মার্চ এসব জ্বালানি চট্টগ্রামে আনার পরিকল্পনা জ্বালানি বিভাগের। স্পর্শকাতর এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই প্রকল্পে মহেশখালী উপকূল থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে এসপিএম স্থাপন করা হয়েছে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল ও ডিজেল খালাস হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ছয়হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে আটশ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।