সুযোগ সৃষ্টি করেছি, নারীদের এখন এগিয়ে আসতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০২:৩৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মার্চ ২০২৪
- / ৪৬৫ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নারীদের সব সুযোগ আমরা করে দিয়েছি এবং সরকারি সেবাপ্রাপ্তিতে নারীদের যে সুযোগ বৃদ্ধি, সেটিও করা হয়েছে। যত রকম আয়বদ্ধ কর্মকাণ্ড আছে, সেখানে যাতে আমাদের নারীরা আরও সুযোগ পায়। আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি, এখন নারীদের এগিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস এবং জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা সুযোগ সৃষ্টি করেছি। এখন মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। ঘরে বসে থাকলে হবে না, কারণ মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, নারী উদ্যোক্তা যাতে গড়ে ওঠে, সেজন্য এসএমই ফাউন্ডেশনে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ছাড় দিয়ে অল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে নারীরা নিজেরা কাজ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল সারা দেশে গড়ে তুলছি। সেখানেও নারীদের জন্য আলাদা প্লটের ব্যবস্থা আছে। উদ্যোক্তা হয়ে মেয়েরা সেখানে বিনিয়োগ করতে চাইলে আলাদা সুবিধা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে আমরা চাচ্ছি, আমাদের নারীদের সমঅধিকার যেন নিশ্চিত হয়। আমরা নারীদের সমান সুযোগ দিতে চাই। আমাদের নারীরা কখনো পিছিয়ে থাকবে না, সেটিই আমার প্রত্যাশা।
অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করার পাশাপাশি নারী-পুরুষ সমানভাবে শ্রম দিয়ে একটি দেশকে গড়ে তুলতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী যদি উঠে না দাঁড়ায়, কাজ না করে, তবে সেই সমাজ কখনো উন্নত হতে পারে না, অগ্রগামী হতে পারে না। নারী-পুরুষ সমানতালে কাজ করলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।
নারীদের প্রসংশা করে তিনি বলেন, সচিব হিসেবে যেখানে আমি মেয়েদের দিয়েছি, তারা খুব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে, তাদের কাজের প্রশংসা না করে পারি না।
এডিবি এবং বিশ্ব ব্যাংকে দুজন নারীকে নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দুই সংস্থায় আমাদের দুই নারী কর্মকর্তা সুযোগ পাচ্ছে। শুধু দেশের ভেতরে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের মেয়েদের যে দক্ষতা আছে, সেটিই আমি প্রমাণ করতে চাই। সেদিক থেকে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।
দেশে প্রথম একজন নারীকে এসপি হিসেবে মুন্সিগঞ্জে নিয়োগ দেওয়া এবং তার সফলতা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের সফলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের সুযোগ দিলে পারবে না, তা হয় না।
এই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের যে বৃত্তি দেই সেই বৃত্তির টাকা সরাসরি মায়ের নামে চলে যায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেই টাকা মায়ের নামে চলে যায়। মায়ের নামে দিলে টাকাটা থাকে, কাজে লাগে আর সেটা সাশ্রয় হয়। বাবার নামে দিলে সব সময় যে পাবে তা তো না। দেখা গেল জুয়া-টুয়া খেলে উড়িয়ে দিল বা দুটো বড় বড় ইলিশ মাছ নিয়ে এসে খেয়ে সাবাড় করে দিল। মা সবসময় সঞ্চয় করে। মায়ের সব সময় সঞ্চয়ের মনোভাব আছে।
মুখে হাসি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি পুরুষদের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। বেশি কিছু বলে নিজের ভোট হারাতে চাই না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নারীদের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, এমনকি বর্ডার গার্ড, কোথাও নারীদের অবস্থান ছিল না। আমরা সেখানে একে একে সব বাহিনীতে মেয়েদের সুযোগ করে দেই। মেরিন একাডেমিতে মেয়েদের পড়ারই সুযোগ ছিল না। সেটাও আমরা করে দিয়েছি। আজ দেশে-বিদেশে মেয়েরা কাজ করছে। আমাদের শান্তিরক্ষা মিশনে মেয়েরা সবচেয়ে ভালো কাজ করছে। জাতিসংঘ এখন মেয়ে অফিসার চায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনীতে আমাদের মেয়েরা দক্ষতার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। একটা সুযোগ দিতে হয়, সুযোগ না দিলে হয় না।
মেয়েদের খেলাধুলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের মেয়েরা এভারেস্টে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে গেছে। পাশাপাশি খেলাধুলায়, অনেক সাধারণ ঘরের মেয়েরা স্বর্ণ জয় করে আনে, তারা তাদের দক্ষতা দেখায়। মেয়েরা তো ফুটবল খেলায় ভারতকেও তিন-এক গোলে হারিয়ে দিয়েছে। নেপালকে হারিয়েছে। সবদিক থেকে তারা পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। আমরা সুযোগ করে দিচ্ছি তারা তাদের পারদর্শিতা দেখাচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা মেয়েদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রথমবার নিয়ম করলাম যে প্রাইমারি শিক্ষকের ৬০ শতাংশ হবে নারী। সেইভাবে আমরা একে একে কাজ শুরু করেছি। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি সারা বাংলাদেশে। ২০০১-এ প্রথমবার করেছিলাম, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সেগুলো বন্ধ করে দেয়। সেখানে নারীরাই কাজ করে। সেখানে হেল্প প্রোভাইডার হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়ে নারীদের কাজে লাগাই।