ঢাকা ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের বন্দর আব্বাসের গ্যাস স্থাপনা, ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেহরানের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে: ইসরায়েলি মিডিয়া :::: ইরানের রাজধানী তেহরান, হরমোজগান, কেরমানশাহ, পশ্চিম আজারবাইজান, লোরেস্তান ও খুজেস্তানসহ ইরানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল :::: ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, কূটনৈতিক উপায় 'এখনো শেষ হয়ে যায়নি' :::: ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারা :::: ইসরাইলি হামলায় ইরানের এসফাহান পরমাণু স্থাপনার চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: আইএইএ :::: ইরানে ইসরায়েলি হামলাকে 'অসহনীয়' বলল জাপান :::: ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বললেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ :::: ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন কাতারের শেখ তামিম :::: ইরানের সামরিক বাহিনী বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের ১০টি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে :::: ইরানের গ্যাসক্ষেত্রে বেসামরিক অবকাঠামোতে ইসরাইলি হামলা ::: তেহরানে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক হামলায় নিহত ৪০

ঝুঁকিপূর্ণ ৫ খাতে শ্রম দিচ্ছে ৩৮ হাজার শিশু: বিবিএস

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৬৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতিবছর দেশে বাড়ছে শিশুশ্রম। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুরাও নিযুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। এরই মধ্যে দেশের ৪৩টি খাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এসব ঝুঁকিপূর্ণ খাতে মোট ৩৮ হাজার ৮ জন শ্রমজীবী শিশু রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টরগুলোতে কর্মরত সকল শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ ছেলে এবং ২ দশমিক ৪ শতাংশ মেয়ে শ্রমজীবী শিশু রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় খাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শিশুশ্রম জরিপ ২০২৩ এর এই প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি সেক্টর নিয়ে জরিপ করেছে বিবিএস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুউমো পোওটেনেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৪৩টি ঝুঁকিপূর্ণ খাতের মধ্যে পাঁচটি খাত প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে রয়েছে শুটকি মাছ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান, চামড়ার তৈরি পাদুকা শিল্প, লোহা ও ইস্পাত শিল্প, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ ও ব্যক্তিগত এবং গৃহস্থলী সামগ্রীর মেরামত শিল্প। এসব খাতের অন্তত ৪০ হাজার প্রতিষ্ঠানে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৩৮ হাজার শিশু কাজ করছে।

এসময় পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান মো. শহীদুজ্জামান সরকার, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হবে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টরে কর্মরত শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে পল্লীতে বাস করে ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। অপরদিকে, শহরে বাস করে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ফলে এই সেক্টরগুলোর বেশিরভাগ শ্রমজীবী শিশুই শহরে কাজ করে তা এ জরিপের মাধ্যমে ওঠে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যেমন ভারী বোঝা বহন করার কাজে ছেলে শ্রমজীবী শিশু কিছুটা বেশি পাওয়া যায় যা ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। বিরতি ব্যতীত দীর্ঘ সময় ধরে রোদে কাজ করে ১৪ দশমকি ৮ শতাংশ এবং অল্প সংখ্যক শ্রমজীবী শিশু (৩ দশমিক ৯ শতাংশ) কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসে কাজ করছে।

কিছু শিশু আগুন, গরম যন্ত্রপাতি বা বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এর সংস্পর্শে আসে যা ২০ দশমিক ২ শতাংশ, ধুলো-বালি, ধোঁয়া বা ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাপ্রাপ্ত হয় এমন কাজে কর্মরত রয়েছে ৩১ দশমিক ১ শতাংশ শ্রমজীবী শিশু। শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও কম তাদের স্ব-স্ব কর্মস্থল থেকে বিনামূল্যে খাবার পায়। এই পাঁচটি সেক্টরে গড়ে শিশুরা প্রতিদিন ৯ দশমিক ৪ ঘণ্টা কাজ করে। শিশুরা যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা সুরক্ষা পদ্ধতি মেনে চলে না।

জরিপের তথ্যে দেখা যায়, শ্রমজীবী শিশুদের বেশিরভাগই (৮৮ দশমিক ৪ শতাংশ) সপ্তাহ শেষে ছুটি উপভোগ করে এবং উৎসবের সময় ছুটি পায়। পরিশেষে এই জরিপটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর লক্ষ্য-৮ ‘শোভন কাজ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ বিশেষ করে সূচক ৮.৭.১ এর চাহিদা পূরণে তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করে।

৫১ দশমিক ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শ্রমজীবী শিশুদের মাসিক ৫ হাজার টাকা বা তার কম বেতন দেয়। ২৮ দশমকি ৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার টাকা বা তার কম মজুরি প্রদান করে এবং মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান উচ্চ বেতন বা মজুরি দেয়।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যের উপর ভিত্তি করে দেশের সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টমো পউটিয়াইনেন বলেন, ‘এই সব তথ্যের মাধ্যমেই দেশের সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে হবে। আমরা বাংলাদেশে শিশুশ্রম নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজে আমরা সবসময় বাংলাদেশের সাথে আছে। এই সমস্যা সমাধানে আইন প্রনয়ণ করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমি মনে করি।’

২০১৩ সালের পর ১০ বছরে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৭৬ হাজার।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঝুঁকিপূর্ণ ৫ খাতে শ্রম দিচ্ছে ৩৮ হাজার শিশু: বিবিএস

আপডেট সময় : ০৮:১৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

প্রতিবছর দেশে বাড়ছে শিশুশ্রম। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুরাও নিযুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। এরই মধ্যে দেশের ৪৩টি খাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এসব ঝুঁকিপূর্ণ খাতে মোট ৩৮ হাজার ৮ জন শ্রমজীবী শিশু রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টরগুলোতে কর্মরত সকল শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ ছেলে এবং ২ দশমিক ৪ শতাংশ মেয়ে শ্রমজীবী শিশু রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় খাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শিশুশ্রম জরিপ ২০২৩ এর এই প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি সেক্টর নিয়ে জরিপ করেছে বিবিএস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুউমো পোওটেনেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৪৩টি ঝুঁকিপূর্ণ খাতের মধ্যে পাঁচটি খাত প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে রয়েছে শুটকি মাছ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান, চামড়ার তৈরি পাদুকা শিল্প, লোহা ও ইস্পাত শিল্প, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ ও ব্যক্তিগত এবং গৃহস্থলী সামগ্রীর মেরামত শিল্প। এসব খাতের অন্তত ৪০ হাজার প্রতিষ্ঠানে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৩৮ হাজার শিশু কাজ করছে।

এসময় পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান মো. শহীদুজ্জামান সরকার, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হবে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টরে কর্মরত শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে পল্লীতে বাস করে ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। অপরদিকে, শহরে বাস করে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ফলে এই সেক্টরগুলোর বেশিরভাগ শ্রমজীবী শিশুই শহরে কাজ করে তা এ জরিপের মাধ্যমে ওঠে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যেমন ভারী বোঝা বহন করার কাজে ছেলে শ্রমজীবী শিশু কিছুটা বেশি পাওয়া যায় যা ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। বিরতি ব্যতীত দীর্ঘ সময় ধরে রোদে কাজ করে ১৪ দশমকি ৮ শতাংশ এবং অল্প সংখ্যক শ্রমজীবী শিশু (৩ দশমিক ৯ শতাংশ) কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসে কাজ করছে।

কিছু শিশু আগুন, গরম যন্ত্রপাতি বা বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এর সংস্পর্শে আসে যা ২০ দশমিক ২ শতাংশ, ধুলো-বালি, ধোঁয়া বা ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাপ্রাপ্ত হয় এমন কাজে কর্মরত রয়েছে ৩১ দশমিক ১ শতাংশ শ্রমজীবী শিশু। শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও কম তাদের স্ব-স্ব কর্মস্থল থেকে বিনামূল্যে খাবার পায়। এই পাঁচটি সেক্টরে গড়ে শিশুরা প্রতিদিন ৯ দশমিক ৪ ঘণ্টা কাজ করে। শিশুরা যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা সুরক্ষা পদ্ধতি মেনে চলে না।

জরিপের তথ্যে দেখা যায়, শ্রমজীবী শিশুদের বেশিরভাগই (৮৮ দশমিক ৪ শতাংশ) সপ্তাহ শেষে ছুটি উপভোগ করে এবং উৎসবের সময় ছুটি পায়। পরিশেষে এই জরিপটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর লক্ষ্য-৮ ‘শোভন কাজ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ বিশেষ করে সূচক ৮.৭.১ এর চাহিদা পূরণে তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করে।

৫১ দশমিক ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শ্রমজীবী শিশুদের মাসিক ৫ হাজার টাকা বা তার কম বেতন দেয়। ২৮ দশমকি ৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার টাকা বা তার কম মজুরি প্রদান করে এবং মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান উচ্চ বেতন বা মজুরি দেয়।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যের উপর ভিত্তি করে দেশের সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টমো পউটিয়াইনেন বলেন, ‘এই সব তথ্যের মাধ্যমেই দেশের সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে হবে। আমরা বাংলাদেশে শিশুশ্রম নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজে আমরা সবসময় বাংলাদেশের সাথে আছে। এই সমস্যা সমাধানে আইন প্রনয়ণ করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমি মনে করি।’

২০১৩ সালের পর ১০ বছরে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৭৬ হাজার।