দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণের ‘বন্যা’ বইয়ে দেবে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এমন ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি।
অবরুদ্ধ গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। একপাশে মিশরের সঙ্গে গাজার সীমান্ত থাকলেও সেখানকার রাফাহ ক্রসিংও নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েলি সেনারা। এমন পরিস্থিতিতে গাজার বাসিন্দারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে আছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো। অনাহারে, অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণ সরবরাহের প্রবেশপথগুলো খুলে দেওয়ার জন্য আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্য বিশ্ব শক্তিগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এরইমধ্যে কয়েকটি দেশ বিমানযোগে গাজায় ত্রাণ ফেলা শুরু করেছে। সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য গাজা উপকূলে একটি অস্থায়ী ডক নির্মাণ শুরু করেছে আমেরিকা।
এমন পরিস্থিতিতে ঘনিষ্ঠ মিত্র আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক মহলের বাড়তে থাকা চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা গাজায় মানবিক ত্রাণের বন্যা বইয়ে দেব।’
এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, অন্তত ছয়টি ত্রাণবাহী লরি নিরাপত্তা বেষ্টনির ৯৬তম গেট দিয়ে গাজা ভূখণ্ডের উত্তরে প্রবেশ করেছে। গাজার এই অংশটিতেই ক্ষুধার সংকট সবচেয়ে তীব্র।
আইডিএফ মুখপাত্র হ্যাগারি জানান, এ ধরনের আরও ত্রাণবহর যাবে এবং অন্য পয়েন্টগুলো দিয়ে আরও সরবরাহ প্রবেশ করবে। পাশাপাশি উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণের প্যাকেজ ফেলা ও সাগরপথে জাহাজ ভর্তি ত্রাণ আসাও চলতে থাকবে।
গত পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নির্বিচার হামলায় গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নিহত হয়েছে ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আর ভূখণ্ডটির ২৩ লাখ বাসিন্দারা প্রায় সবাই ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে।