ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

১২ দস্যুর নিয়ন্ত্রণে এমভি আব্দুল্লাহ, ক্রুরা অক্ষত

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৩৯৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারত মহাসাগরে ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহতে ১২ জন জলদস্যুর উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর)। সাগরের এই অঞ্চলে অপারেশন আটলান্টা নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইইউএনএভিএফওআর।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জাহাজ আব্দুল্লাহর ওপর অপারেশন আটলান্টা নজর রাখছে। জাহাজটির বর্তমান অবস্থান সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে। জাহাজটি বর্তমানে এখানে নোঙর করে আছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষণে জাহাজটিতে ১২ জন দস্যুর উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। যদিও আক্রমনের সময় দলটিতে ২০জন ছিলেন। সম্ভবত এই দস্যুদলের সদস্যরাই এ অঞ্চলে কিছুদিন আগে এমভি রুয়েন নামের আরেক জাহাজ ছিনতাই করেছিল।’

সোমালি উপকূলে জলদস্যুদের সম্ভাব্য তিনটি ঘাটির সন্ধান পেয়েছে ইইউ নেভি। তারা মনে করছেন, এই ঘাটিগুলো থেকেই ছিনতাই পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত আছে। জাহাজের ক্রুরা এখনও নিরাপদ আছেন বলেই জানা গেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখার কথা জানিয়েছে অপারেশন আটলান্টা।

গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে।

জাহাজটিতে জিম্মি এক বাংলাদেশি নাবিক জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ জিম্মিদের উদ্ধার করতে এলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

ওই নাবিক বলেন, ‘কারণ তারা তখন আমাদের জিম্মি করে রাখে, মাথায় বড় বড় অস্ত্র তাক করে। দুটি বড় বড় ফ্রিগেট আসছিল। সব ইকুইপমেন্ট নিয়ে। কিন্তু তারা (জলদস্যুরা) এসবে ভয় পায় না। কারণ তারা আমাদের জিম্মি করে রাখে। আমাদের মাথায় গুলি ধরে রাখে। আমাদের তারা রেস্ট্রিকটেড করে রাখে। তবে এখন পর্যন্ত আঘাত করেনি। সবাই একটা রুমে ঘুমাচ্ছি। একটা ওয়াশরুম ব্যবহার করছি।’ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, জাহাজটি উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে পরিবারের কাছে এই অডিও বার্তাটি পাঠানো হয়। আতিক উল্লাহ খানের মামা জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অডিও বার্তা আতিক উল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের সামনে জলদস্যুরা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আশপাশে নেভি জাহাজ দেখলেই তারা আমাদের মাথায় অস্ত্র ঠেকাচ্ছে। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ওরা আমাদের জিম্মি করে রাখছে।’

আতিকুল্লাহ খান বলেন, ‘আমি যেখানে ঘুমাই সেখানে পাশ ফিরলেই দেখতে পাই আমার দিকে বড় বড় মেশিনগান তাক করে রেখেছে। এই অবস্থায় ঘুমানো অসম্ভব। মানসিকভাবে চাপের মধ্যে থাকলেও সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি।’

জাহাজে মজুত খাবারের বিষয়ে এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখনও খাবার আছে। কিন্তু, যেহেতু জলদস্যুরাও আমাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছে, আমাদের পানি ব্যবহার করছে, আমাদের খাবার আর কতদিন যাবে সেটা বলতে পারছি না। আর হয়তো ১০ থেকে ১৫ দিন যেতে পারে। এরপর খাবার ও পানি শেষ হয়ে গেলে খুব কষ্টে পড়ে যাব।’

নিউজটি শেয়ার করুন

১২ দস্যুর নিয়ন্ত্রণে এমভি আব্দুল্লাহ, ক্রুরা অক্ষত

আপডেট সময় : ০১:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

ভারত মহাসাগরে ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহতে ১২ জন জলদস্যুর উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর)। সাগরের এই অঞ্চলে অপারেশন আটলান্টা নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইইউএনএভিএফওআর।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জাহাজ আব্দুল্লাহর ওপর অপারেশন আটলান্টা নজর রাখছে। জাহাজটির বর্তমান অবস্থান সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে। জাহাজটি বর্তমানে এখানে নোঙর করে আছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষণে জাহাজটিতে ১২ জন দস্যুর উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। যদিও আক্রমনের সময় দলটিতে ২০জন ছিলেন। সম্ভবত এই দস্যুদলের সদস্যরাই এ অঞ্চলে কিছুদিন আগে এমভি রুয়েন নামের আরেক জাহাজ ছিনতাই করেছিল।’

সোমালি উপকূলে জলদস্যুদের সম্ভাব্য তিনটি ঘাটির সন্ধান পেয়েছে ইইউ নেভি। তারা মনে করছেন, এই ঘাটিগুলো থেকেই ছিনতাই পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত আছে। জাহাজের ক্রুরা এখনও নিরাপদ আছেন বলেই জানা গেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখার কথা জানিয়েছে অপারেশন আটলান্টা।

গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে।

জাহাজটিতে জিম্মি এক বাংলাদেশি নাবিক জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ জিম্মিদের উদ্ধার করতে এলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

ওই নাবিক বলেন, ‘কারণ তারা তখন আমাদের জিম্মি করে রাখে, মাথায় বড় বড় অস্ত্র তাক করে। দুটি বড় বড় ফ্রিগেট আসছিল। সব ইকুইপমেন্ট নিয়ে। কিন্তু তারা (জলদস্যুরা) এসবে ভয় পায় না। কারণ তারা আমাদের জিম্মি করে রাখে। আমাদের মাথায় গুলি ধরে রাখে। আমাদের তারা রেস্ট্রিকটেড করে রাখে। তবে এখন পর্যন্ত আঘাত করেনি। সবাই একটা রুমে ঘুমাচ্ছি। একটা ওয়াশরুম ব্যবহার করছি।’ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, জাহাজটি উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে পরিবারের কাছে এই অডিও বার্তাটি পাঠানো হয়। আতিক উল্লাহ খানের মামা জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অডিও বার্তা আতিক উল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের সামনে জলদস্যুরা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আশপাশে নেভি জাহাজ দেখলেই তারা আমাদের মাথায় অস্ত্র ঠেকাচ্ছে। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ওরা আমাদের জিম্মি করে রাখছে।’

আতিকুল্লাহ খান বলেন, ‘আমি যেখানে ঘুমাই সেখানে পাশ ফিরলেই দেখতে পাই আমার দিকে বড় বড় মেশিনগান তাক করে রেখেছে। এই অবস্থায় ঘুমানো অসম্ভব। মানসিকভাবে চাপের মধ্যে থাকলেও সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি।’

জাহাজে মজুত খাবারের বিষয়ে এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখনও খাবার আছে। কিন্তু, যেহেতু জলদস্যুরাও আমাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছে, আমাদের পানি ব্যবহার করছে, আমাদের খাবার আর কতদিন যাবে সেটা বলতে পারছি না। আর হয়তো ১০ থেকে ১৫ দিন যেতে পারে। এরপর খাবার ও পানি শেষ হয়ে গেলে খুব কষ্টে পড়ে যাব।’