ট্রাম্পের নির্দেশে চীনের বিরুদ্ধে গোপন অভিযান চালায় সিআইএ
- আপডেট সময় : ০১:৩৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
- / ৩৯৭ বার পড়া হয়েছে
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে গোপন এক অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিলেন। চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা ছিল ওই অভিযানের লক্ষ্য। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া ওই অভিযান সম্পর্কে জানেন এমন কয়েকজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সাবেক ওই তিন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, চীনের বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের জন্য সিআইএ একটি ছোট দল গঠন করে। ওই দলের সদস্যরা ভুয়া পরিচয়ে অনলাইন মাধ্যমে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালাতে শুরু করে। একইসঙ্গে চীন নিয়ে মর্যাদাহানিকর গোয়েন্দা তথ্য বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে ফাঁস করা হয়।
গোপন অভিযানে সম্পৃক্ত সিআইএ সদস্যরা চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে নেতিবাচক প্রচারণা চালান। বিশেষ করে এসব নেতা অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন বলে খবর ছড়ানো হয়। এ ছাড়া চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে দুর্নীতিতে জর্জরিত প্রকল্প বলে প্রচার চালানো হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় শত শত কোটি ডলারের অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বেইজিং।
দুই সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, অভিযানের প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। এতে দেশটির সরকার বাধ্য হয়ে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি অর্থ ব্যয়ে বাধ্য হয়।
এ অভিযানের বিষয়টি জানার পর সিআইএর সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। গোপন অভিযান এখনো চলছে কি না এবং এর লক্ষ্য ও প্রভাব কী, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তবে সিআইএর মুখপাত্র চেলসি রবিনসন এসব প্রশ্নের বিষয়ে কোনো সাড়া দেননি।
এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করে রয়টার্স। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, চীনের বিরুদ্ধে সিআইএর এ ধরনের অভিযান প্রমাণ করে যে আমেরিকা সরকার সামাজিক ও সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানো এবং আন্তর্জাতিক মনোভাবকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে থাকে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই গোপন অভিযান এখনো চালু রেখেছেন কি না, সেটি নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স। বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র কেট ওয়াটার্সের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হওয়া হলে তিনি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গোয়েন্দা ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন এমন দুই ব্যক্তির সঙ্গে সিআইএর এ অভিযান নিয়ে কথা বলে রয়টার্স। তাঁরা জানান, হোয়াইট হাউস থেকে এ ধরনের কোনো গোপন অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হলে সাধারণত পরবর্তী প্রেসিডেন্ট এলেও তা অব্যাহত থাকে।
গত দশকে বিশ্বজুড়ে নিজেদের তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্য চুক্তি এবং ব্যবসায় অংশীদারত্ব বাড়িয়েছে দেশটি। এর মধ্য দিয়ে আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্বের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে বিশ্বে চীনের প্রভাব বিস্তার ঘটে। চীনের এই প্রভাব মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা চালিয়ে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো।