ঢাকা ০৪:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজায় ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরাইলি হামলা, নিহত ২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৩৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনের ভিড়ে নির্বিচার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন।

গাজার পৃথক দুটি স্থানে ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েল এই হামলা চালায়। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ। শুক্রবার (১৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে ইসরায়েল বলেছে গুলিবর্ষণের এই ঘটনা ‘অনিচ্ছাকৃত’।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকায় দুটি পৃথক ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় সহায়তার অপেক্ষায় থাকা কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি ঘটনায় ৮ ফিলিস্তিনি এবং অন্য ঘটনায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তারা সবাই ত্রাণ নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

গাজার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, প্রথম ঘটনায় মধ্য গাজা উপত্যকার আল-নুসেইরাত ক্যাম্পে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন। এরপর দ্বিতীয় হামলার ঘটনা ঘটে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর গাজার একটি গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ভিড়ে ইসরায়েলি বাহিনী গুলিবর্ষণ করলে অন্তত ২১ জন নিহত এবং আরও ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, কুয়েত গোলচত্বরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২০ জনের মৃতদেহ আল-শিফা হাসপাতালে আনা হয়েছে। গাজা সিটিতে সাহায্যপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েলের গুলিবর্ষণের ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০ জন মৃত ফিলিস্তিনি এবং ১৫৫ জন আহত মানুষকে গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আহতরা আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে মেঝেতে পড়ে আছে। দুর্বল চিকিৎসা সক্ষমতার কারণে চিকিৎসা সেবা দানকারী দলগুলো এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে অক্ষম।’

অবশ্য ত্রাণ কেন্দ্রে হামলার কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। একইসঙ্গে হামলার এসব রিপোর্টকেও ‘মিথ্যা’ বলে বর্ণনা করেছে তারা।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘যেহেতু আইডিএফ সকল ঘটনাকে পুঙ্খানুপুঙ্খতার সাথে মূল্যায়ন করে, আমরা মিডিয়াকে একই কাজ করার এবং শুধুমাত্র বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ওপর নির্ভর করার আহ্বান জানাই।’

গাজা উপত্যকায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে হামাসের সাথে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। এই যুদ্ধে ৩১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ২৪ লাখ বাসিন্দার গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।

অর্ধাহার-অনাহারে লাখ লাখ মানুষ দিনাতিপাত করছেন। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা থেকে বাঁচতে উপত্যকার দক্ষিণের রাফাহ শহরে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আর এই শহরটিতে ইসরায়েল আগ্রাসন চালাতে পারে বলে জানিয়েছে। তবে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজা শহরের কাছের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকা শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

যদিও প্রাণহানির এই ঘটনায় ত্রাণবাহী ট্রাককে ঘিরে থাকা ফিলিস্তিনিদের ভিড়কে দায়ী করে ইসরায়েল বলেছে, ভুক্তভোগীরা পদদলিত অথবা গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরাইলি হামলা, নিহত ২৯

আপডেট সময় : ০১:৪৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনের ভিড়ে নির্বিচার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন।

গাজার পৃথক দুটি স্থানে ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েল এই হামলা চালায়। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ। শুক্রবার (১৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে ইসরায়েল বলেছে গুলিবর্ষণের এই ঘটনা ‘অনিচ্ছাকৃত’।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকায় দুটি পৃথক ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় সহায়তার অপেক্ষায় থাকা কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি ঘটনায় ৮ ফিলিস্তিনি এবং অন্য ঘটনায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তারা সবাই ত্রাণ নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

গাজার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, প্রথম ঘটনায় মধ্য গাজা উপত্যকার আল-নুসেইরাত ক্যাম্পে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন। এরপর দ্বিতীয় হামলার ঘটনা ঘটে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর গাজার একটি গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ভিড়ে ইসরায়েলি বাহিনী গুলিবর্ষণ করলে অন্তত ২১ জন নিহত এবং আরও ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, কুয়েত গোলচত্বরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২০ জনের মৃতদেহ আল-শিফা হাসপাতালে আনা হয়েছে। গাজা সিটিতে সাহায্যপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েলের গুলিবর্ষণের ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০ জন মৃত ফিলিস্তিনি এবং ১৫৫ জন আহত মানুষকে গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আহতরা আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে মেঝেতে পড়ে আছে। দুর্বল চিকিৎসা সক্ষমতার কারণে চিকিৎসা সেবা দানকারী দলগুলো এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে অক্ষম।’

অবশ্য ত্রাণ কেন্দ্রে হামলার কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। একইসঙ্গে হামলার এসব রিপোর্টকেও ‘মিথ্যা’ বলে বর্ণনা করেছে তারা।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘যেহেতু আইডিএফ সকল ঘটনাকে পুঙ্খানুপুঙ্খতার সাথে মূল্যায়ন করে, আমরা মিডিয়াকে একই কাজ করার এবং শুধুমাত্র বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ওপর নির্ভর করার আহ্বান জানাই।’

গাজা উপত্যকায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে হামাসের সাথে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। এই যুদ্ধে ৩১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ২৪ লাখ বাসিন্দার গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।

অর্ধাহার-অনাহারে লাখ লাখ মানুষ দিনাতিপাত করছেন। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা থেকে বাঁচতে উপত্যকার দক্ষিণের রাফাহ শহরে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আর এই শহরটিতে ইসরায়েল আগ্রাসন চালাতে পারে বলে জানিয়েছে। তবে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজা শহরের কাছের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকা শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

যদিও প্রাণহানির এই ঘটনায় ত্রাণবাহী ট্রাককে ঘিরে থাকা ফিলিস্তিনিদের ভিড়কে দায়ী করে ইসরায়েল বলেছে, ভুক্তভোগীরা পদদলিত অথবা গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন।