‘আমিতো কোনোদিন কারও কোনো ক্ষতি করি নাই। আমার এতো বড় ক্ষতি কি করে হলো।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার পর কুমিল্লার বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় শুক্রবার (১৬ মে) মধ্যরাতে এমনভাবেই বিলাপ করছিলেন তার মা।
এ সময় অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যা দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আম্মান, রাফি, মাহিয়ান, লাকি, রিমি, আঁখি, বন্যা ও দ্বীন ইসলাম আমার মেয়ের জীবনটাকে বিষিয়ে তুলেছিল। তারা বিভিন্নভাবে আমার মেয়েকে হয়রানি করে আজকের অবস্থার সৃষ্টি করেছে।’
অবন্তিকার মা বলেন, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে গিয়েও আমার মেয়ে কোনো বিচার পায়নি। উল্টো তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে, অপমান করা হয়েছে। আমার মেয়ে বিচার পেলে আজকের দিনে তাকে চলে যেতে হতো না।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রক্টর সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, বিষয়টির সুরাহার জন্য। আমার মেয়ে যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারে, সেটি আর হলো না। ওদের জন্য আমি মেয়ে হারিয়েছি, আমি তাদের বিচার চাই।’
এদিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফাইরুজ আবন্তিকা নামের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে মধ্যরাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা জেলা সদরের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। পরে তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, ফাইরুজ আবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আত্মহত্যা চেষ্টার আগে ফেসবুকে দেয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেছেন।