দারুণ ফর্মে আছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র
- আপডেট সময় : ০৩:৪২:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪
- / ৩৯৯ বার পড়া হয়েছে
ওসাসুনার বিপক্ষেই গত মৌসুমের কোপা দেল রের ফাইনাল জিতেছিল রেয়াল মাদ্রিদ। এ মৌসুমে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট শেষ ষোলোতেই বাদ পড়েছে। গত মৌসুমের ফর্ম এ মৌসুমে ধরে রাখতে পারেনি বাস্ক অঞ্চলের ক্লাব। গতকাল তাই অনুমিতভাবেই ফেবারিট ছিল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠে শুরুটা ভালো করলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে পেরে ওঠেনি ওসাসুনা। ৪-২ গোলের জয়ে লিগে দুইয়ে থাকা জিরোনার চেয়ে ১০ পয়েন্ট এগিয়ে গেছে মাদ্রিদ।
দারুণ ফর্মে আছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। গত চার ম্যাচে ছয় গোল তাঁর। সঙ্গে একটি অ্যাসিস্টও আছে, কিন্তু এই চার ম্যাচেই একটি করে হলুদ কার্ডও জুটেছে। প্রতিপক্ষ ও অন্য দলের সমর্থকদের প্ররোচনায় মাথা গরম করে প্রতিদিনই হলুদ কার্ড খাচ্ছেন। গতকাল যেমন হলো।
ম্যাচের ৪ মিনিটে প্রতিপক্ষে ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ভিনিসিয়ুস। গোলকিপারকে এগিয়ে আসতে দেখে ডানদিকে নিয়ে যান টেনে, তারপর গোলকিপারের ভারসাম্য নষ্ট করে দূরের পোস্টে বল পাঠিয়ে দেন। শুরু থেকে স্বাগতিক দর্শকের হেনস্থার শিকার হওয়া ভিনিসিয়ুস বেশ আগ্রাসী ঢঙেই উদ্যাপন করেছেন।
৩ মিনিট পরই সমতায় ফেরে ওসাসুনা। মৌসুমে নিজের ১৫তম গোল করে বুদিমির স্বাগতিকদের ম্যাচে ফেরালেও মাত্র ১১ মিনিট টিকেছে এই ভারসাম্য। ১৮ মিনিটে ব্রাহিম দিয়াসের ফ্লিক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পেনাল্টি স্পটে পাঠান ফেদে ভালভার্দে।
ওসাসুনা রক্ষণ ভিনিসিয়ুসকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ব্রাজিলিয়া উইঙ্গার একজনকে টেনে নিয়ে যান অন্যদিকে। ঐ ফাঁকে কারভাহাল এসে বুটের বাইরের দিক ব্যবহার করে বল জালে পাঠিয়ে দেন। প্রথমার্ধের বাকি সময় ভিনিসিয়ুস বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা জাগালেও সেগুলো পূর্ণতা পায়নি। উলটো রেফারির সঙ্গে তর্ক করে হলুদ কার্ড দেখে বসেন। লিগে পরের ম্যাচে আর না হচ্ছে না তাঁর। ৪১ মিনিটে হোসে আরনেইসের শট মাদ্রিদ গোলকিপার আন্দ্রিয়া লুনিন দুর্দান্ত ডাইভে ঠেকিয়ে না দিলে সমতায় ফিরতে পারত স্বাগতিক দল।
দ্বিতীয়ার্ধেও মাদ্রিদের দাপট ছিল। ৬১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় অ্যাসিস্ট পান ভালভার্দে। যদিও তাতে তাঁর অবদান খুব কম। নিজেদের বক্স থেকে একটি ক্রস মাঝমাঠে থাকা ভালভার্দের মাথা ছুঁয়ে চলে যায় ওসাসুনা অর্ধে। এক ছুটে সে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন ব্রাহিম দিয়াস। পাশে থাকা ডিফেন্ডার ও এগিয়ে আসা গোলকিপারকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ে ঠান্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে দেন।
৩ মিনিট পর অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় ভালভার্দের। রুডিগারের লম্বা পাস বুক দিয়ে নামিয়ে ফেলেন ভিনিসিয়ুসের সামনে। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে একটু বেশিই এগিয়ে গিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। কিন্তু হাল না ছেড়ে দুরূহ কোণ থেকেই বল ঠেলে দেন গোলের দিকে। গোলকিপার একদম কাছেই থাকায় বল ধরতে পারেননি। ডিফেন্ডার যতক্ষণে ফেরালেন, ততক্ষণে বল লাইন অতিক্রম করে ফেলেছে।
এরপরও মাদ্রিদ গোল পেতে পারত। ৭৫ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় চারজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন রদ্রিগো, কিন্তু ফর্মে না থাকা এই ব্রাজিলিয়ান তরুণ শট নিয়েছেন গোলকিপারের গায়ে। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ইকের মুনোস ওসাসুনার হয়ে একটি গোল শোধ করেন। তবে ৩ মিনিট পর ব্যবধান বাড়তে পারত মাদ্রিদের।
আক্রমণে উঠেছিল ওসাসুনা, তাই তাদের গোলকিপারও একটু এগিয়ে এসেছিল। নিজেদের অর্ধে বল দখলে পেয়ে আর্দা গুলাশ মাঝমাঠের কাছেই একটা শট নেন। সে শট ক্রসবারে লেগে ফেরে। ফিরতি বল এসে পড়ে ভালভার্দের কাছে। গুলাশের শটের চেয়েও অবিশ্বাস্যভাবে সে বলে শট নিতে ব্যর্থ হন ভালভার্দে।
লিগে টানা ২৩ ম্যাচ অপরাজিত মাদ্রিদ এই জয়ে শিরোপার আরও কাছে চলে গেছে। কারণ দুইয়ে থাকা জিরোনা ১-০ গোলে হেরে গেছে হেতাফের কাছে। তবে আগামী ম্যাচে ভিনিসিয়ুসকে ছাড়াই অ্যাথলেটিক বিলবাওর মাঠে খেলতে যাবে মাদ্রিদ।
ম্যাচ শেষে এই ব্রাজিলিয়ান কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন আনচেলত্তি, ‘আজ সে কোনো সমস্যা ছাড়াই চার গোল করতে পারত। সব পরিস্থিতিতে সে দুর্দান্ত ছিল, গোলের সামনে একদম শীতল। আমাদের এমন এক খেলোয়াড়ই দরকার।’