ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল–শিফা হাসপাতালে আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল রোববার রাতভর গাজার সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনারা অভিযান চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
অভিযানের পেছনে যুক্তি হিসেবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হাসপাতাল ভবনটি হামাসের জ্যেষ্ঠ জঙ্গিরা ব্যবহার করছে। এমন তথ্য জানার পর সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একজন মুখপাত্র বলেন, হাসপাতালে সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ট্যাংক, ড্রোন ও ভারী অস্ত্র দিয়ে নির্ভুল অপারেশন চালাচ্ছে আইডিএফ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হাসপাতালের চারপাশে তীব্র গোলাগুলি হচ্ছে, বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালের ভেতরে আটকা পড়া মুহাম্মদ আল-সায়িদ নামের এক ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের কাছে একটি অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি বলছেন, ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতাল ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। সবাই খুবই আতঙ্কিত। ভেতরের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। অংসখ্য মৃতদেহ এখানে সেখানে পড়ে রয়েছে। তবে হতাহতের সংখ্যা কত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করা এক কল রেকর্ডে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ট্যাঙ্কগুলো আমাদের ঘিরে রেখেছে। আমরা তাঁবুর ভেতরে আটকা পড়েছি। হাসপাতালের আশপাশ থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল–শিফা। এখানে আশ্রয় নিয়েছিল শতাধিক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি। কিন্তু নতুন করে হামলার আগে কোনো ধরনের ইঙ্গিত দেয়নি ইসরায়েল।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আল–শিফায় প্রথম হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। সে সময় তারা হাসপাতাল ভবনের নিচে হামাস যোদ্ধাদের সুড়ঙ্গ খুঁজে পেয়েছিল বলে দাবি করেছিল ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩১ হাজার ৬৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া ২০ লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে।