ঢাকা ০১:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

২০৩০ সাল পর্যন্ত রাশিয়া চালাবেন প্রেসিডেন্ট পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৫৮:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৬৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও একটি ভূমিধ্বস বিজয় পেয়ে ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তাকে কোনোভাবে আটকানো যাবে না।’ বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

৭১ বছর বয়সী ভ্লাদিমির পুতিন টানা পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে ভোটগ্রহণের পর বুথফেরত জরিপ বলছে, ভূমিধ্বস বিজয় পেয়েছেন পুতিন। কারণ তাঁর কোনো বিরোধী নেই। যারা ছিলেন, তাঁরা সবাই মারা গেছেন অথবা কারাবন্দি রয়েছেন।

প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসা পুতিন আবার নতুন ছয় বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসছেন। এর মাধ্যমে পুতিন জোসেফ স্ট্যালিনকে ছাড়িয়ে যাবেন এবং ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি নেতা হবেন তিনি।

ফলাফলে দেখা যায়, পুতিন ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। রাশিয়ার সোভিয়েত-পরবর্তী ইতিহাসে সর্বোচ্চ ফলাফল পেয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মস্কোতে তাঁর নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন রুশ জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য এবং আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আমার কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন।’

পুতিন আরও বলেন, ‘কেউ কেউ আমাদের ভয় দেখাতে চায়, আমাদের দমন করতে চায়, কিন্তু আমাদের ইতিহাস বলছে, এমন অপচেষ্টা কোনোদিন সফল হয়নি। ভবিষ্যতেও সফল হবে না। রাশিয়াকে কেউ আটকাতে পারবে না।’

নির্বাচনে পুতিনের জয় নিয়ে কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না। কারণ তার সমালোচকরা বেশিরভাগই হয় জেলে, না হয় নির্বাসনে বা মৃত। এছাড়া পুতিনের প্রতি জনসাধারণের সমালোচনাও দমিয়ে রাখা হয়েছে। এবার প্রার্থী হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কয়েকজনের নাম ব্যালটে নেই। তাদের একজন সম্প্রতি প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি। রাশিয়ায় পুতিনের সবচেয়ে বড় সমালোচক মনে করা হতো তাঁকে। দীর্ঘদিন কারাবন্দী থাকার পর গত মাসে কারাগারে মৃত্যু হয় নাভালনির। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন বরিস নাদেজদিন ও সাংবাদিক ইয়েকাতেরিনা দুনৎসভা। বর্ষীয়ান রাজনীতিক নাদেজদিন ইউক্রেন যুদ্ধের একজন সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সাংবাদিক দুনৎসভাও পুতিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি দুজনের কেউই। রুশ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় তারা নির্বাচনে অংশই নিতে পারেননি।

নির্বাচনে পুতিনের বিরুদ্ধে লড়েছেন তিনজন নামমাত্র প্রার্থী। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালটে পুতিন ছাড়া যে তিন প্রার্থীর নাম আছে, তাদের একজন নিকোলাই খারিতোনোভ। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত হলেও নিজের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী পুতিনের প্রশংসাই করেন বেশি। আরেক প্রার্থী লিওনিড স্লাটস্কি। তিনিও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে পশ্চিমাবিরোধী আলোচনাতেই ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভ। এই প্রার্থীও পুতিনপন্থী একজন রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত।

নির্বাচনে জয়লাভের পর এক ভাষণে ‘তার প্রতি সমর্থন ও বিশ্বাস রাখার জন্য’ রাশিয়ানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পুতিন। এসময় পশ্চিমাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারাই আমাদের ভয় দেখানো বা দমনের চেষ্টা করুক না কেন; ইতিহাসে কেউই এইসব করে সফল হয়নি, তাদের এই প্রচেষ্টা এখনো কাজে দিচ্ছে না, ভবিষ্যতেও দেবে না।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় এখন তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হবেন এবং সেক্ষেত্রে তার ক্ষমতার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

২০৩০ সাল পর্যন্ত রাশিয়া চালাবেন প্রেসিডেন্ট পুতিন

আপডেট সময় : ০২:৫৮:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও একটি ভূমিধ্বস বিজয় পেয়ে ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তাকে কোনোভাবে আটকানো যাবে না।’ বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

৭১ বছর বয়সী ভ্লাদিমির পুতিন টানা পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে ভোটগ্রহণের পর বুথফেরত জরিপ বলছে, ভূমিধ্বস বিজয় পেয়েছেন পুতিন। কারণ তাঁর কোনো বিরোধী নেই। যারা ছিলেন, তাঁরা সবাই মারা গেছেন অথবা কারাবন্দি রয়েছেন।

প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসা পুতিন আবার নতুন ছয় বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসছেন। এর মাধ্যমে পুতিন জোসেফ স্ট্যালিনকে ছাড়িয়ে যাবেন এবং ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি নেতা হবেন তিনি।

ফলাফলে দেখা যায়, পুতিন ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। রাশিয়ার সোভিয়েত-পরবর্তী ইতিহাসে সর্বোচ্চ ফলাফল পেয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মস্কোতে তাঁর নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন রুশ জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য এবং আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আমার কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন।’

পুতিন আরও বলেন, ‘কেউ কেউ আমাদের ভয় দেখাতে চায়, আমাদের দমন করতে চায়, কিন্তু আমাদের ইতিহাস বলছে, এমন অপচেষ্টা কোনোদিন সফল হয়নি। ভবিষ্যতেও সফল হবে না। রাশিয়াকে কেউ আটকাতে পারবে না।’

নির্বাচনে পুতিনের জয় নিয়ে কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না। কারণ তার সমালোচকরা বেশিরভাগই হয় জেলে, না হয় নির্বাসনে বা মৃত। এছাড়া পুতিনের প্রতি জনসাধারণের সমালোচনাও দমিয়ে রাখা হয়েছে। এবার প্রার্থী হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কয়েকজনের নাম ব্যালটে নেই। তাদের একজন সম্প্রতি প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি। রাশিয়ায় পুতিনের সবচেয়ে বড় সমালোচক মনে করা হতো তাঁকে। দীর্ঘদিন কারাবন্দী থাকার পর গত মাসে কারাগারে মৃত্যু হয় নাভালনির। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন বরিস নাদেজদিন ও সাংবাদিক ইয়েকাতেরিনা দুনৎসভা। বর্ষীয়ান রাজনীতিক নাদেজদিন ইউক্রেন যুদ্ধের একজন সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সাংবাদিক দুনৎসভাও পুতিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি দুজনের কেউই। রুশ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় তারা নির্বাচনে অংশই নিতে পারেননি।

নির্বাচনে পুতিনের বিরুদ্ধে লড়েছেন তিনজন নামমাত্র প্রার্থী। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালটে পুতিন ছাড়া যে তিন প্রার্থীর নাম আছে, তাদের একজন নিকোলাই খারিতোনোভ। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত হলেও নিজের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী পুতিনের প্রশংসাই করেন বেশি। আরেক প্রার্থী লিওনিড স্লাটস্কি। তিনিও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে পশ্চিমাবিরোধী আলোচনাতেই ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভ। এই প্রার্থীও পুতিনপন্থী একজন রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত।

নির্বাচনে জয়লাভের পর এক ভাষণে ‘তার প্রতি সমর্থন ও বিশ্বাস রাখার জন্য’ রাশিয়ানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পুতিন। এসময় পশ্চিমাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারাই আমাদের ভয় দেখানো বা দমনের চেষ্টা করুক না কেন; ইতিহাসে কেউই এইসব করে সফল হয়নি, তাদের এই প্রচেষ্টা এখনো কাজে দিচ্ছে না, ভবিষ্যতেও দেবে না।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় এখন তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হবেন এবং সেক্ষেত্রে তার ক্ষমতার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়বে।