জনগণের প্রতি সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই: হাফিজ
- আপডেট সময় : ০৫:৩২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
- / ৩৯৪ বার পড়া হয়েছে
জনগণের প্রতি সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মেজর (অব.) হাফিজ এ সময় বলেন, জনগণের প্রতি সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণের আজ নাভিঃশ্বাস অবস্থা। কিন্তু এটা নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথাই নেই। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হবে না বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।
বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান দাবি করেন, নির্লজ্জভাবে প্রতিবেশী দেশের প্রতি সরকার আনুগত্য স্বীকার করে যাচ্ছে। ভারতের অধীন হতে দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি বলেও মন্তব্য তাঁর।
সভায় হাফিজ বলেন, ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বর্তমান শাসক দলের অভ্যাস। তাদের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) যখন বিপদে পড়েন তখন বলেন, দিল্লি আছে—আমরা আছি। এই ধরনের কথা বলতে তাদের লজ্জাবোধও হয় না। আমরা কি এজন্য যুদ্ধ করেছি? দেশের মানুষ কখনোই এই ধরনের গোলামী মেনে নেবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতার মূল্যবোধ উজ্জীবিত করে এর লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিএনপি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিএনপির সংগ্রাম জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাবার সংগ্রাম, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।’
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দেশবাসীর জন্য সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রামে অবশ্যই আমাদের জয়ী হতে হবে। এই সংগ্রামে চুল-দাড়ি পেকে গেলেও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নেতৃত্ব দিতে হবে। আপনারা দেশের আদর্শ। আপনাদের দিকে তাকিয়ে একজন তরুণ অনুপ্রাণিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেমেছি এই সংগ্রাম ব্যর্থ হতে পারে না। অবশ্যই দুঃশাসনের অবসান হবে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের নতুন প্রজন্ম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে।’
তিনি বলেন, ‘২৪ বছর অনেক অন্যায়-অবিচার-বঞ্চনার শিকার আমরা হয়েছি। জনগণের ভোটে শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দাবিদার ছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তার দলের অনুসারীরা এখন প্রমাণ করেন, স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি দিয়ে গিয়েছেন।
কিন্তু তাজউদ্দিন আহমেদ মিলিটারি মুভমেন্ট শুরু হওয়ার পরেই সম্ভবত সর্বশেষ শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে টেপ রেকর্ডার নিয়ে গিয়ে বলেছিলেন, আপনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। রাজপথে পাকিস্তান সেনা বাহিনী ছড়িয়ে গেছে, তারা জনতার উপর আক্রমণ করবে। তিনি (শেখ মুজিবুর রহমান) বলেছিলেন, আমি পাকিস্তান ভাঙার দায়িত্ব নিতে পারি না। আমি বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত হবো, যদি স্বাধীনতার ঘোষণা দেই। এটি হলো বাস্তব সত্য। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদকের কথা।’
তিনি বলেন, ‘তার (শেখ মুজিবুর রহমান) অনেক কৃতিত্ব আছে। কিন্তু মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম থেকে জীবন বিপন্ন করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, এই কৃতিত্ব দিতে হবে। এটুকু কৃতিত্ব অন্যকে দিতে কেন এতো অপরগতা? কেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানি এজেন্ট বলে প্রমাণ করতে চান? তারা (আওয়ামী লীগ) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সাহাবুদ্দিন রেজার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবেদীন ফারুক, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানসহ অনেকে।