রাশিয়ার মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত বেড়ে ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে দেড় শতাধিক। শুক্রবার রাতে ক্রোকাস সিটি হলে বিশাল কনসার্টে হামলার ঘটনায় আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ৫ মিনিটের এই বক্তব্যে তিনি হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের শাস্তির আওতায় আনার ঘোষণা দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, এই হামলায় ইউক্রেন সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ করেনি রাশিয়া। তবে, নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি বলছে, হামলার পর ইউক্রেনের দিকে যাচ্ছিল চারজন। তাদের সেখান থেকে আটক করা হয়েছে। এরই মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
শুক্রবার রাতের এই হামলার ব্যাপারে পুতিন বলেন, ‘হামলাকারীরা ঠান্ডা মাথার। তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই এই হামলা করেছে। তারা আমাদের জনতা ও শিশুদের গুলি করে মেরেছে।’
এই বক্তব্যে ইউক্রেনের নামটাও বলেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা লুকিয়ে ও পালিয়ে ইউক্রেনে চলে যেতে চেয়েছিল। আমাদের প্রাথমিক তথ্যমতে, সেখানে যাওয়ার পর তাদেরকে নিরাপদে পালিয়ে যাওয়ার সব পথ করা ছিল। তারা যে ই হোক না কেন, যারাই এই হামলায় নির্দেশনা দিক না কেন, আমি আবার বলছি, আমরা তাদের খুঁজে বের করব এবং প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনব। যারা সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে, তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।’
শুক্রবার রাতে হামলায় নিহত ও আহতের ঘটনায় একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন পুতিন। রোববার রাশিয়ায় একদিনের শোক পালন করা হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কাছে ক্রোকাস সিটি হলে বিশাল কনসার্টে করা এই হামলা গত দুই দশকের মধ্যে ভয়াবহ। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসকে) এ হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আমেরিকার গোয়েন্দারা। আইএসও হামলার দায় স্বীকার করেছে।
নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি দাবি করছে, হামলাকারীদের মস্কোতে পাঠানো হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। ইউক্রেনকে আড়ালে রাখতেই এভাবে পরিকল্পনা করে হামলা হয়েছে। টেলিগ্রামে এক পোস্টে এসব কথা বলেন এফএসবির মুখপাত্র মারিয়া জাখারভা।
এই হামলায় ইউক্রেনের যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন রুশ জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা আন্দ্রেই কারতাপোলোভও। তিনি বলেন, ইউক্রেন জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে এর কঠোর জবাব দিতে হবে রাশিয়াকে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক জানিয়েছেন, শুক্রবার মস্কোর কনসার্ট হলে হামলার সঙ্গে কিয়েভের সম্পর্ক নেই। মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে তিনি বলেন, হামলা সম্পর্কে সোজা কথা বলা যাক। এই ঘটনাগুলোতে ইউক্রেনের করার কিছুই ছিল না। আমরা রুশ সেনাবাহিনীর সাথে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ করছি।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের মুখপাত্র আন্দ্রিয়ে ইউসভ রয়টার্সকে বলেন, মোটেই ইউক্রেন এতে জড়িত না।