ড্রোন বা চালকবিহীন আকাশযান এখন যুদ্ধের অন্যতম সেরা হাতিয়ার। বলা যায়, আধুনিক বিশ্বে চলমান যুদ্ধে ড্রোন ছাড়া বিজয় অসম্ভব। ইউক্রেনে রুশ অভিযান এবং হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। কারণ এসব যুদ্ধেও সফলতা পেতে ড্রোন নির্ভরতা বাড়ছে।
অবশেষে ‘গাজা’ নামের ড্রোনটি বাজারজাত করার জন্য আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো ইরান। কাতারের দোহায় হওয়া আন্তর্জাতিক অস্ত্র মেলায় এটি প্রকাশ্যে এনেছে দেশটি। শক্তিশালী ‘শাহেদ’ ড্রোনের থেকেও প্রযুক্তিগত দিক থেকে 'গাজা' এগিয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
চালকবিহীন যুদ্ধযানটির কথা সামনে এলেই আলোচনায় উঠে আসে ইরানের নাম। কারণ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র তৈরি করে বহু বছর আগে থেকেই আলোচনায় থাকা দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ড্রোন শিল্পে বিপ্লব ঘটিয়েছে। খোদ পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমেই এমন তথ্য উঠে আসছে।
এমনকি রাশিয়া, হামাস ও হুতি বিদ্রোহীরা ইরানের তৈরি ড্রোন দিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এছাড়া আফগানিস্তান, আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজিস্তান ও কাজাখস্তানের মতো দেশগুলো ইরান থেকে ড্রোন কিনছে, এমন তথ্য-প্রমাণ হাজির করছে পশ্চিমারা।
এমন উত্তেজনার মধ্যেই বিশ্ববাজারে 'গাজা' নামের ড্রোন নিয়ে হাজির হয়েছে ইরান। ২০২১ সালে ড্রোনটি আবিস্কারের কথা সামনে এলেও দীর্ঘসময় সফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এটি বাজারজাত করতে যাচ্ছে দেশটি। কাতারের দোহায় হওয়া আন্তর্জাতিক অস্ত্র মেলায় নিয়ে আসা এই ড্রোন ১৩টি বিধ্বংসী বোমা নিয়ে ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ১২০০ মাইল পর্যন্ত উড়তে পারে বলে দাবি করছে তেহরান।
ইরানের সবচেয়ে বিখ্যাত ও শক্তিশালী ড্রোন শাহেদ-ওয়ান থ্রি সিক্স। ধারণা করা হচ্ছে, ‘গাজা’ নামের ড্রোনটি শাহেদ ড্রোনের থেকেও শক্তিশালী হবে। ১৯৮০-এর দশকে ইসরাইল যেভাবে ড্রোন শিল্পে এগিয়ে গেছে কিংবা তারও আগে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ড্রোনের ক্ষেত্রে একক আধিপত্য বিস্তার করেছে- ঠিক সেই জায়গায় পৌঁছানোই ছিল ইরানের মূল টার্গেট। এ যাত্রায় অনেকটা এগিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে তেহরান।
গত বছর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আমদানি-রপ্তানিতে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে ইরানি অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। যে তালিকায় উল্লেখযোগ্য অস্ত্রই হলো ড্রোন।