০৮:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কারের দাবি

ফিলিস্তিনে নির্মম গণহত্যার দায়ে জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্যালেস্টাইন সংহতি কমিটি আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান।

প্যালেস্টাইন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুলাহেল কাফি রতন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বলেন, আমরা গণহত্যা দেখেছি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ আমাদের দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা করেছিল। তার চেয়েও ভয়াবহভাবে ফিলিস্তিনকে একটা অবরুদ্ধ কারাগারে পরিণত করে সেই কারাগারে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। আমরা জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলের বহিষ্কার দাবি করছি। জাতিসংঘ যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তা পালন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ এখন রাষ্ট্রসংঘে পরিণত হয়েছে। আর এ রাষ্ট্রগুলো সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী। ফলে তারাই এর নীতিনির্ধারণ করে থাকে। ফলে এমন গণহত্যা চললেও জাতিসংঘ নীরব ভূমিকা নিয়ে আছে। হিটলার যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছিল, আজ ইসরায়েলের নেতানিয়াহু একই ভূমিকায় নেমেছে। প্যালেস্টাইনে যা হচ্ছে এটা কোনো যুদ্ধ নয়, ধর্মযুদ্ধ তো নয়ই, এটা নৃশংস, নির্মম গণহত্যা। সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে আজ আমরা প্রতিবাদ করছি, সারা বিশ্বজুড়েই প্রতিবাদ হচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বলছেন পৃথিবীর ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। যুদ্ধ, মাদক-অস্ত্র ব্যবসা, মহামারি ইত্যাদি নানা কারণে। কিন্তু আসল যে কারণ তা হচ্ছে পুঁজিবাদ। প্যালেস্টাইনে যে গণহত্যা চলছে তারও গভীরে গেলে আমরা দেখব যে পুঁজিবাদই এ সংকটের মূল কারণ। আজ আমরা যে স্মারকলিপি পেশ করব সেটা শুধু আমাদের বক্তব্য নয়, এটা পুরো দুনিয়ার মানুষের কথা। আমেরিকার যে তরুণ বৈমানিক নিজের শরীর আগুন দিয়ে এ গণহত্যার প্রতিবাদ করেছেন, এটা তারও কথা। আমরা অবিলম্বে এ গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে এবং এর সব সংস্থা থেকে বহিষ্কারের দাবি করছি। মানুষ ও মনুষ্যত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়েই আমরা আমাদের এ দাবি করছি।

বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ইসরায়েল সব আন্তর্জাতিক রীতিনীতি, মানবাধিকার ও আইনকে তোয়াক্কা না করে অবিশ্বাস্য কায়দায় প্যালেস্টাইনে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও ইসরায়েলকে সমর্থন করে চলায় ইসরায়েল এই ঔদ্ধত্য দেখাতে পারছে। গাজার নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র ইসরায়েলি বাহিনী যে আক্রমণ করছে, তার মধ্যে নিহত মানুষদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু। ৭ অক্টোবর থেকে এ দফায় গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন ও ইউরোপীয় অস্ত্র কোম্পানিগুলো বিপুল মুনাফা করছে। এরা ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে। একাত্তর সালের ২৫শে মার্চ বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছিল, আজ প্যালেস্টাইনে এ গণহত্যার পেছনেও একই দৃষ্টিভঙ্গি, মতাদর্শ ও একই রাজনীতি পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। তাই এ গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো পৃথিবীর সব দেশের সব মানুষের কর্তব্য।

তিনি বলেন, এ গণহত্যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। এ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকেও একদিন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি আমরা এ সমাবেশ থেকে জানাই। আমরা গত ২৯ ডিসেম্বর প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা ও ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছি। সারা দুনিয়ার মানুষ এ গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাই জাতিসংঘের প্রতি বলতে চাই, সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর প্রতিনিধি না হয়ে এ প্রতিবাদী মানুষের সঙ্গে একাত্ম হন।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কারের দাবি

আপডেট : ০৬:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

ফিলিস্তিনে নির্মম গণহত্যার দায়ে জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্যালেস্টাইন সংহতি কমিটি আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান।

প্যালেস্টাইন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুলাহেল কাফি রতন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বলেন, আমরা গণহত্যা দেখেছি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ আমাদের দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা করেছিল। তার চেয়েও ভয়াবহভাবে ফিলিস্তিনকে একটা অবরুদ্ধ কারাগারে পরিণত করে সেই কারাগারে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। আমরা জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলের বহিষ্কার দাবি করছি। জাতিসংঘ যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তা পালন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ এখন রাষ্ট্রসংঘে পরিণত হয়েছে। আর এ রাষ্ট্রগুলো সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী। ফলে তারাই এর নীতিনির্ধারণ করে থাকে। ফলে এমন গণহত্যা চললেও জাতিসংঘ নীরব ভূমিকা নিয়ে আছে। হিটলার যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছিল, আজ ইসরায়েলের নেতানিয়াহু একই ভূমিকায় নেমেছে। প্যালেস্টাইনে যা হচ্ছে এটা কোনো যুদ্ধ নয়, ধর্মযুদ্ধ তো নয়ই, এটা নৃশংস, নির্মম গণহত্যা। সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে আজ আমরা প্রতিবাদ করছি, সারা বিশ্বজুড়েই প্রতিবাদ হচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বলছেন পৃথিবীর ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। যুদ্ধ, মাদক-অস্ত্র ব্যবসা, মহামারি ইত্যাদি নানা কারণে। কিন্তু আসল যে কারণ তা হচ্ছে পুঁজিবাদ। প্যালেস্টাইনে যে গণহত্যা চলছে তারও গভীরে গেলে আমরা দেখব যে পুঁজিবাদই এ সংকটের মূল কারণ। আজ আমরা যে স্মারকলিপি পেশ করব সেটা শুধু আমাদের বক্তব্য নয়, এটা পুরো দুনিয়ার মানুষের কথা। আমেরিকার যে তরুণ বৈমানিক নিজের শরীর আগুন দিয়ে এ গণহত্যার প্রতিবাদ করেছেন, এটা তারও কথা। আমরা অবিলম্বে এ গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে এবং এর সব সংস্থা থেকে বহিষ্কারের দাবি করছি। মানুষ ও মনুষ্যত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়েই আমরা আমাদের এ দাবি করছি।

বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ইসরায়েল সব আন্তর্জাতিক রীতিনীতি, মানবাধিকার ও আইনকে তোয়াক্কা না করে অবিশ্বাস্য কায়দায় প্যালেস্টাইনে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও ইসরায়েলকে সমর্থন করে চলায় ইসরায়েল এই ঔদ্ধত্য দেখাতে পারছে। গাজার নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র ইসরায়েলি বাহিনী যে আক্রমণ করছে, তার মধ্যে নিহত মানুষদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু। ৭ অক্টোবর থেকে এ দফায় গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন ও ইউরোপীয় অস্ত্র কোম্পানিগুলো বিপুল মুনাফা করছে। এরা ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে। একাত্তর সালের ২৫শে মার্চ বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছিল, আজ প্যালেস্টাইনে এ গণহত্যার পেছনেও একই দৃষ্টিভঙ্গি, মতাদর্শ ও একই রাজনীতি পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। তাই এ গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো পৃথিবীর সব দেশের সব মানুষের কর্তব্য।

তিনি বলেন, এ গণহত্যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। এ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকেও একদিন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি আমরা এ সমাবেশ থেকে জানাই। আমরা গত ২৯ ডিসেম্বর প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা ও ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছি। সারা দুনিয়ার মানুষ এ গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাই জাতিসংঘের প্রতি বলতে চাই, সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর প্রতিনিধি না হয়ে এ প্রতিবাদী মানুষের সঙ্গে একাত্ম হন।