হারানো গৌবর ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ: প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০১:১৪:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
- / ৩৯১ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে উদ্দেশ্যে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ও হারানো গৌবর ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু রাষ্ট্রটি দেননি, বাংলাদেশ কীভাবে চলবে সেই পথরেখাও তিনি দেখিয়েছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসেনি ভারত। ১৯৭৫ পরবর্তী মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতেন, বিজয়ী জাতি তাদের পূর্বের কথা বলতে পারত না। যে উদ্দেশ্যে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ও হারানো গৌবর ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ।
পুরস্কার প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন বঙ্গবন্ধুর প্রণীত সংবিধানের আলোকে দেশ পরিচালনা করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
সরকার প্রধান বলেন, ইফতার পার্টি না করে ইফতার সাধারণ মানুষের মাঝে বণ্টন করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলেন, ইফতার পার্টি বড় কথা নয়, বরং মানুষকে দেয়াই মুখ্য বিষয়।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বেড়েছে, দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, তাই ইফতার পার্টি না করে তা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলে, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমার এগিয়ে যাব। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, এটাই আমাদের নীতি। তারপরও দেশে কিছু মানুষ আছে যারা আগুন সন্ত্রাস করে, অগ্নিসন্ত্রাস না করে, তাদের সুমতি হোক সেটাই চাই আমরা।
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে যে মিলিটারি ডিক্টেটর ক্ষমতায় এসেছিল, তারাও এ দেশে একাত্তরের মতোই গণহত্যা চালিয়েছিল। আমাদের সেনা অফিসারদের একের পর এক হত্যা করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং এরপরে নির্বাচনী প্রহসন, দল গঠন, দল ভাঙন। নানান ধরনের খেলা ২১টি বছর আমাদের ওপর চলেছে।
সরকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এই বাংলাদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ঠিকানাবিহীন থাকবে না। প্রতি ঘরে ঘরে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। শিক্ষার হার বৃদ্ধি করেছি, দারিদ্র্যের হার কমিয়ে এনেছি, উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্ব-উদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরো অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরো লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২৪ সালে ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এবার ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে তিনজন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ ক্ষেত্রে একজন, চিকিৎসাবিদ্যায় একজন পুরস্কার পান। এছাড়া সংস্কৃতিতে একজন, ক্রীড়ায় একজন এবং সমাজসেবায় তিনজন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ এ পদকে ভূষিত করা হয়। তারা হলেন- ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর)। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ ক্যাটাগরিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ। সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান এবং ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন। ‘সমাজসেবা/জনসেবা’ ক্ষেত্রে অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী এবং এস এম আব্রাহাম লিংকন। এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।