ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করায় রাশিয়ায় এক সাংবাদিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় রুশ সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার একটি আদালত ইউক্রেনে মস্কোর পূর্ণ-মাত্রার সামরিক অভিযানের নিন্দা করার দায়ে এক সাংবাদিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। এছাড়া একদিনে আরও পাঁচ সাংবাদিককে আটক করেছে মস্কোর পুলিশ।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করায় দণ্ডপ্রাপ্ত রুশ ওই সাংবাদিকের নাম মিখাইল ফেল্ডম্যান। রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কালিনিনগ্রাদের একটি আদালত জানায়, ওই সাংবাদিক ভিকেওন্তাক্তে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একাধিক পোস্টে রুশ বাহিনীকে অসম্মান করেছেন।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় কয়েক শত ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সামরিক সেন্সরশিপ আইনের অধীনে, রাশিয়ানদের যারা অনলাইনে আক্রমণাত্মক সমালোচনা করেন কিংবা যেসব সাংবাদিক রুশ কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য ছাড়া অন্য কোনো তথ্য ব্যবহার করেন তাদের কয়েক বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ায় আটককৃত পাঁচ সাংবাদিকের একজন হচ্ছেন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সোটাভিশনের সাংবাদিক অ্যান্তোনিনা ফাভরস্কায়া। প্রয়াত বিরোধী রাজনীতিক অ্যালেক্সেই নাভালনির সমাধিতে ফুল দেওয়ার জন্য তিনি সম্প্রতি ১০ দিনের জন্য কারাবন্দী ছিলেন। বুধবার রাতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ফাভরস্কায়ার সহকর্মী আলেকজান্দ্রা আস্তাখোভা ও আনাস্তাসিয়া মুসাতোভা আটক কেন্দ্রে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলে তাদেরও আটক করে পুলিশ।
পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ সোটাভিশন থেকে আরেক সাংবাদিক একেতেরিনা অ্যানিকিয়েভিচ এবং রুশনিউজের সাংবাদিক কনস্ট্যান্টিন ঝারভকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা ফাভরস্কায়ার বাড়ির কাছে চিত্রগ্রহণ করছিলেন।
দুই বছরেরও বেশি সময় আগে ইউক্রেনে সেনা পাঠিয়ে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে রাশিয়ার অধিকাংশ স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে নিষিদ্ধ না হয় সেন্সর করার চেষ্টা করেছে মস্কো। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনেক স্বাধীন সাংবাদিক রাশিয়া ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আর যারা এখনও দেশটিতে আছেন তাঁরা ঝুঁকিতে রয়েছেন।