ঢাকা ০২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে সবুজ অরণ্যে, হাদিস কি বলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
  • / ৪২৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য। নির্ধারিত সময়ের পর আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী ধ্বংস করে দেবেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে- একটি মাত্র ফুঁক; তখন জমিন ও পর্বতমালাকে উড়ানো হবে। মাত্র একটি আঘাতে সব চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।

ফলে সে দিন মহাপ্রলয় সংঘটিত হবে। আসমান বিদীর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সেদিন তা হয়ে যাবে দুর্বল বিক্ষিপ্ত। ফেরেশতারা আসমানের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে। সেদিন তোমার রবের আরশকে আটজন ফেরেশতা তাদের ঊর্ধ্বে বহন করবে। সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোনো গোপনীয়তাই গোপন থাকবে না। (সূরা আল হাক্কাহ, আয়াত, ১৩-১৮)।

অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সেদিন জমিন ও পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পাহাড়গুলো চলমান বালুকারাশিতে পরিণত হবে। ’ (সূরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত, ১৪)।

কেয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার আগে বেশ কিছু আলামত প্রকাশ পাবে। যার মাধ্যমে বোঝা যাবে যে, কেয়ামত নিকটবর্তী। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত, ১৮)

কোরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং হাদিসে কেয়ামতের আলামতগুলো বর্ণিত হয়েছে। আলামতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আবার মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ঘটবে এর উল্টোটা। বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে।

হজরত আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ২২২৯)

হাদিস বিশারদদের মতে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের বর্ণনায় শুধু বর্তমান সৌদি আরব উদ্দেশ্য নয়। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। শুধু সৌদ রাষ্ট্রকে নয়। আরব উপদ্বীপকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ নিয়ে গঠিত ছিল, যা পরবর্তী সময়ে আলাদা আলাদা দেশে বিভক্ত হয়েছে।

আরব উপদ্বীপের দেশগুলো হলো, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল-কাইওয়াইন। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী ও দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর), ইয়েমেন ও ওমান।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেয়ামতের যেসব আলামতের বর্ণনা দিয়েছেন, তার মধ্যে বড় আলামতগুলো হলো- ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ, মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব, ঈসা আলাইহিস সালামের আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব অঞ্চলে বড় ধরণের তিনটি ভূমিধ্বস, বিশাল ধোঁয়া, পশ্চিম গগণে সূর্যোদয়, অদ্ভুত জন্তুর প্রকাশ, ইয়েমেন থেকে আগুন বের হয়ে মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। -(সহিহ জামে আস্-সগীর, হাদিস ৭৭৫২)।

নিউজটি শেয়ার করুন

মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে সবুজ অরণ্যে, হাদিস কি বলে

আপডেট সময় : ০২:১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য। নির্ধারিত সময়ের পর আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী ধ্বংস করে দেবেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে- একটি মাত্র ফুঁক; তখন জমিন ও পর্বতমালাকে উড়ানো হবে। মাত্র একটি আঘাতে সব চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।

ফলে সে দিন মহাপ্রলয় সংঘটিত হবে। আসমান বিদীর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সেদিন তা হয়ে যাবে দুর্বল বিক্ষিপ্ত। ফেরেশতারা আসমানের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে। সেদিন তোমার রবের আরশকে আটজন ফেরেশতা তাদের ঊর্ধ্বে বহন করবে। সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোনো গোপনীয়তাই গোপন থাকবে না। (সূরা আল হাক্কাহ, আয়াত, ১৩-১৮)।

অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সেদিন জমিন ও পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পাহাড়গুলো চলমান বালুকারাশিতে পরিণত হবে। ’ (সূরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত, ১৪)।

কেয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার আগে বেশ কিছু আলামত প্রকাশ পাবে। যার মাধ্যমে বোঝা যাবে যে, কেয়ামত নিকটবর্তী। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত, ১৮)

কোরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং হাদিসে কেয়ামতের আলামতগুলো বর্ণিত হয়েছে। আলামতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আবার মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ঘটবে এর উল্টোটা। বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে।

হজরত আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ২২২৯)

হাদিস বিশারদদের মতে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের বর্ণনায় শুধু বর্তমান সৌদি আরব উদ্দেশ্য নয়। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। শুধু সৌদ রাষ্ট্রকে নয়। আরব উপদ্বীপকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ নিয়ে গঠিত ছিল, যা পরবর্তী সময়ে আলাদা আলাদা দেশে বিভক্ত হয়েছে।

আরব উপদ্বীপের দেশগুলো হলো, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল-কাইওয়াইন। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী ও দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর), ইয়েমেন ও ওমান।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেয়ামতের যেসব আলামতের বর্ণনা দিয়েছেন, তার মধ্যে বড় আলামতগুলো হলো- ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ, মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব, ঈসা আলাইহিস সালামের আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব অঞ্চলে বড় ধরণের তিনটি ভূমিধ্বস, বিশাল ধোঁয়া, পশ্চিম গগণে সূর্যোদয়, অদ্ভুত জন্তুর প্রকাশ, ইয়েমেন থেকে আগুন বের হয়ে মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। -(সহিহ জামে আস্-সগীর, হাদিস ৭৭৫২)।