বুয়েট ক্যাম্পাসে লুটপাটের রাজনীতি চালু করতে চায় ছাত্রলীগ: ছাত্রদল
- আপডেট সময় : ০৪:৪৭:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪
- / ৪০৪ বার পড়া হয়েছে
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অভিযোগ করেছে, ছাত্র রাজনীতির নামে ছাত্রলীগ আবারও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট ক্যাম্পাসে লুটপাটের রাজনীতি চালু করতে চায়। সংগঠনের নেতারা বলেছেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি-না এই সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষার্থী ও বুয়েট প্রশাসন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের প্রাণঘাতী নির্যাতন থেকে নিস্তার পেতেই বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, দেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে ছাত্রলীগ। বুয়েটের চলমান আন্দোলনের সাথে একাত্মতা জানান ছাত্রদল সভাপতি।
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন ছাত্ররাজনীতির আতুড়ঘর এবং গণতন্ত্র চর্চার তীর্থস্থান হিসেবে খ্যাত ছিল। কিন্তু ছাত্রলীগ গত পনের বছর ধরে এককভাবে মধুর ক্যান্টিন দখলে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতন্ত্র চর্চার কফিনে শেষ পেরেক মেরে দেয়।
তিনি বলেন, মধুর ক্যান্টিনে নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদ কায়েম করে বুয়েটে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যাওয়া একটি প্রহসন। এর পেছনে রাজনীতি চর্চার কোনো উদ্দেশ্য নেই বরং বুয়েটের ক্যান্টিন, মেস, দোকানপাট থেকে চাঁদাবাজি এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেকে টেন্ডারবাজি করতে না পারার হতাশা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছাত্রলীগ সমর্থক নগণ্য সংখ্যক বিপথগামী বুয়েটের শিক্ষার্থীর সহায়তায় ক্যাম্পাসে পুনরায় লুটপাট এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করার ষড়যন্ত্র করেছে।
তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক অধিকারের কথা বলে ছাত্রলীগ বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার যে কথা বলেছে তা একটি নিষ্ঠুর প্রতারণা। ছাত্র রাজনীতির নামে তারা ক্যাম্পাসে একক দখলদারিত্ব এবং ছাত্র নির্যাতনের টর্চার সেল পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসগুলোতে ‘টোটালিটারিয়ান ভায়োলেন্ট অ্যাক্টিভিজম’ করছে। ক্যাম্পাসে ভায়োলেন্স এবং টর্চারকে ছাত্ররাজনীতি বলা যায় না। ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হলে সকল ক্যাম্পাসে এবং হলে সকল রাজনৈতিক রাজনৈতিক সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করা আবশ্যক।
তিনি বলেন, সংগঠনকে অবাধে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দিতে হবে। সকল শিক্ষার্থীকে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু এসবের কোনো কিছু না করে ছাত্রলীগের সভাপতিসহ কেন্দ্ৰীয় নেতাদের সঙ্গে রাতের আঁধারে মিটিং করে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছে। ভবিষ্যতে বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হলে তার দায়দায়িত্ব ছাত্রলীগকে এবং বুয়েটের প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বুয়েটসহ দেশের সকল ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং সহাবস্থান দাবী করছি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠন হিসেবে সুস্থ ধারার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনীতি চর্চায় বিশ্বাসী। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ক্যাম্পাসে অপরাজনীতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।