আজ থেকে বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৩:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪
- / ৪১১ বার পড়া হয়েছে
বান্দরবানে আজ থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালাবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ শনিবার সকালে বান্দরবানের রুমায় পৌঁছে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রুম ও থানচিতে ব্যাংকে হামলাকারীরা কেএনএফের সদস্য। পার্শ্ববর্তী দেশের সন্ত্রাসীদের থেকে তাদের হাতে অস্ত্র এসেছে। এসব সন্ত্রাসীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্যাঞ্চলকে অশান্ত করতে দেওয়া হবে না। হামলার ঘটনায় কারো গাফিলতি আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ডাকাতির মূল উদ্দেশ্য ছিল বোধ হয় অর্থ সংগ্রহ করা, এখন পর্যন্ত আমরা যা মনে করছি। আমরা সব কিছুই দেখব। অস্ত্র সহকারে এবং পোশাক সহকারে এখানে ঢুকবে; আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে এটাও কাম্য নয়। যা করার নিরাপত্তা বাহিনী এখন সেটা করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাব। আমরা কোনো ক্রমেই আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে আর দেবো না। এই শান্তি প্রিয় এলাকায়, যেখানে শান্তির সুবাতাস সব সময় বইতো, এখানে অশান্তি হোক এটা আমরা চাই না। আমরা অবশ্যই এর কারণ, কারা করেছে, কাদের সহযোগিতা ছিল সবগুলো বের করব এবং আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
অভিযান শুরু হবে কি না জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে নিরাপত্তা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে, তারা তাদের মতো করে করবেন। কোনো কিছুকেই আমরা আনচ্যালেঞ্জড যেতে দেবো না। উৎস কোথায়, কীভাবে হলো সবগুলো আমরা বের করব।
পার্বত্য অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সম্প্রতি ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, থানায় আক্রমণের ঘটনায় উত্তপ্ত বান্দরবান। এমন অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে আজ বেলা ১টার দিকে বান্দরবানের রুমায় পৌঁছান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন। বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন সহ, ঊর্ধ্বতন নেতারা আছেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।
স্থানীয়রা বলছেন, থানচি থানার পাশে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে তা থানচি বাজারের কাছে চলে আসে। এ সময় সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময় হয়। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে তারা প্রায় ৫০০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়।