০২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাস জুড়েই থাকবে তাপপ্রবাহ

দিনভর তীব্র গরমে নাকাল জনজীবন। সকাল থেকেই তাপ ছড়াতে শুরু করে সূর্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাপ বাড়তেই থাকে। এমনিতেই রোজার মাস, এর ওপর আবার চৈত্রের দাবদাহ। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস জনজীবনে। আর এমন গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।

ঢাকাসহ দেশের চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এপ্রিলজুড়েই সারাদেশে এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। দেশের কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টি আবার কোথাও তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে আজ। শনিবারের (৬ এপ্রিল) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানের আবহাওয়ার এ অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করবে।

রোববার (৭ এপ্রিল) দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। হালকা বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা কমবে না। আর ঈদের সময় তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন স্থায়ী হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ভৌগোলিক অবস্থা আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণেই আবহাওয়ার এ পরিবর্তন। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিসংখ্যানও বছরের পর বছর বেরিয়ে আসছে। ২০২৩ সাল এখন পর্যন্ত রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও একটি-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।

তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গত বছরের এপ্রিলে সারাদেশে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়জুড়ে তাপপ্রবাহ ছিল। ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা জানান, বাংলাদেশের ওই অঞ্চলের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অবস্থান। কিন্তু এসব প্রদেশের তাপমাত্রা অনেক বেশি। এসব জায়গায় বছরের এ সময়ে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে ওঠানামা করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, জার্মান রেড ক্রস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর যৌথভাবে ২০২১ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করে। যার ফলাফলে দেখা গেছে- ঢাকায় হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। আর হিটওয়েভের কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়াসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত বছর রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৭ এপ্রিল, ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মাস জুড়েই থাকবে তাপপ্রবাহ

আপডেট : ০১:৫৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

দিনভর তীব্র গরমে নাকাল জনজীবন। সকাল থেকেই তাপ ছড়াতে শুরু করে সূর্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাপ বাড়তেই থাকে। এমনিতেই রোজার মাস, এর ওপর আবার চৈত্রের দাবদাহ। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস জনজীবনে। আর এমন গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।

ঢাকাসহ দেশের চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এপ্রিলজুড়েই সারাদেশে এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। দেশের কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টি আবার কোথাও তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে আজ। শনিবারের (৬ এপ্রিল) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানের আবহাওয়ার এ অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করবে।

রোববার (৭ এপ্রিল) দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। হালকা বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা কমবে না। আর ঈদের সময় তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন স্থায়ী হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ভৌগোলিক অবস্থা আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণেই আবহাওয়ার এ পরিবর্তন। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিসংখ্যানও বছরের পর বছর বেরিয়ে আসছে। ২০২৩ সাল এখন পর্যন্ত রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও একটি-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।

তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গত বছরের এপ্রিলে সারাদেশে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়জুড়ে তাপপ্রবাহ ছিল। ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা জানান, বাংলাদেশের ওই অঞ্চলের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অবস্থান। কিন্তু এসব প্রদেশের তাপমাত্রা অনেক বেশি। এসব জায়গায় বছরের এ সময়ে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে ওঠানামা করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, জার্মান রেড ক্রস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর যৌথভাবে ২০২১ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করে। যার ফলাফলে দেখা গেছে- ঢাকায় হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। আর হিটওয়েভের কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়াসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত বছর রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৭ এপ্রিল, ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।