ছাদে যাত্রী নিয়ে উদাসীন রেল কর্তৃপক্ষ
- আপডেট সময় : ০১:২৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪
- / ৪০৫ বার পড়া হয়েছে
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা। নাড়ির টানে বাড়ির পথে মানুষ। এতে বাস, লঞ্চ টার্মিনালের মতো কমলাপুর রেলস্টেশনেও বেড়েছে চাপ। এদিকে শেষ মুহূর্তের দিন ট্রেন যাত্রায় ভেঙে পড়েছে রেলের নিয়মশৃঙ্খলা। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ভোর থেকেই রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছাদ ভর্তি যাত্রী নিয়েই রওয়ানা করছে ট্রেন।
জীবনের ঝুকি নিয়েও সবাই অপেক্ষায় উদগ্রীব হয়ে আছে কখন বাড়ি ফিরবেন। স্বজনের সাথে ভাগাভাগি করবেন ঈদের আনন্দ। আজ কমলাপুর স্টেশন থেকে বিভিন্ন রুটে ৬৯টি ট্রেন ছেড়ে যাবে।
এদিকে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে দুই দিনের টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। যদি আজ চাঁদ দেখা যায় তাহলে ১১ ও ১২ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে সন্ধ্যার পর থেকে। আর যদি চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ১০ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।
গত তিন এপ্রিল থেকে ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু পর গেলো কয়েকদিনে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ দেখা যায়নি। গার্মেন্টস ছুটির পর মঙ্গলবার থেকে পাল্টাতে থাকে চিত্র। আর এতেই ফিরেছে ট্রেনে ঈদযাত্রার আগের বছরগুলোর সেই চিরচেনা রূপ।
বিশেষ করে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনের ছাদে ভিড় করেছেন যাত্রীরা। বগির ভেতরে দাঁড়ানোর জায়গা থাকলেও, ছাদে উঠে যাচ্ছেন স্ট্যান্ডিং টিকেটের এসব যাত্রী। টিকেট ছাড়া কেউ ভেতরে না ঢুকতে পারলেও, ছাদ থেকে যাত্রী নামানোর কোন চেষ্টা নেই রেল পুলিশের।
ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হওয়ায় আজ থেকে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। তাই পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন তারা। সকাল থেকেই একের পর এক ট্রেন ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। দুই দফা টিকিট পরীক্ষা করার পর যাত্রীদের মূল প্ল্যাটফর্মে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
তবে সকাল থেকে প্রতিটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে গেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে প্রতিটি ট্রেনের ছাদ ছিলো যাত্রীবোঝাই। চোখের সামনে সব কিছু দেখেও নির্বিকার কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, যাত্রী চাপে অনেক কিছুই মেনে নিতে হচ্ছে।
এবারও টিকিটবিহীন মানুষের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ ঠেকাতে তিনটি চেকিং ব্যবস্থা নিয়েছিল ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন। তিনটি চেকপোস্টেই রেলওয়ে কর্মকর্তারা সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। এর মধ্যেও কয়েকজন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। তারা অতীতের টিকিট নিয়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করছেন। এমন যাত্রীর সংখ্যা প্রতি মিনিটে অন্তত দুই জন বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ১৭টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে কমলাপুর ছেড়েছে। আজ সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়লেও সবগুলো ট্রেন যথাসময়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে। যাত্রী সাধারণের কোন অভিযোগ-আপত্তি নেই। দিনের বাকি সময়ও নিরাপদ যাত্রা হবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, ঈদের দিন সব আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে দুই দিনের টিকিট বিক্রি করা হয়।
মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, গত ছয়দিন ধরে যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছেন তারা নিরাপদে বাড়িতে ফিরেছেন। আজ এখন পর্যন্ত যেসব ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে তাতে কোনো বিলম্ব হয়নি। একটা ট্রেনে আধা ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে। আপনারা জানেন গতকাল (সোমবার) কিছু বিশেষ অঞ্চলের ট্রেনে ব্যাপক চাপ হয়েছিল। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিক একসঙ্গে এসে উঠেছে। আজ সকালে উত্তরাঞ্চলের একটাই ট্রেন ছিল, রংপুর এক্সপ্রেস। সেটাতেও অনেক চাপ পড়েছে। এ ছাড়া পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেসেও ব্যাপক চাপ লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আপনারা জানেন উৎসবমুখর পরিস্থিতির বাস্তবতায় তাদের ছাদ থেকে নামানো যায়নি।