পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে একটি যাত্রীবাহী ট্রাক খাদে পড়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন, সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩৮ জন। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটেছে এই দুর্ঘটনা।
বেলুচিস্তানের খুজদার জেলায় পাকিস্তানের বিখ্যাত শাহ নূরানি মাজারের অবস্থান বেলুচিস্তানের খুজদার জেলায়। পুলিশসূত্রে জানা গেছে, যাত্রীবাহী ট্রাকটি দেশটির দক্ষিপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধের থাট্টা জেলা থেকে শাহ নূরানি মাজারের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রাপথে বেলুচিস্তানের হাব জেলায় ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
ট্রাকটির ড্রাইভার করিম বখশকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বেলুচিস্তান প্রাদেশিক পুলিশের উপ বিভাগীয় কর্মকর্তা (এসডিপিও) সাকরো ওয়াজিদ আলী জিও নিউজকে বলেন, সড়কে মোড় ঘোরার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় ট্রাকটি।
দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের হাব জেলার জাম গুলাম কাদির হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেই হাসপাতালের মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে সাকরো ওয়াজিদ আলী বলেন, ‘ট্রাকটিতে মোট ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। ১৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৮ জন। বাকিদের আঘাত সামান্য। নিহতদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ট্রাকের চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এই যাত্রীদের সবাই থাট্টা জেলার মাকলি তহসিল (উপজেলা) কাসিম জোখিও গ্রামের বাসিন্দা।
দুর্ঘটনা ঘটার পর সেখানে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং সমাজকর্মীদের তত্ত্বাবধানে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। এই দলের অন্যতম সদস্য ও সমাজকর্মী সাদ এধি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বেলা ১১ টার দিকে তারা প্রথম এই দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন এবং দুই ঘন্টা তৎপরতা সবাইকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
সাদ বলেন, ‘ঠিক কখন দুর্ঘটনা ঘটেছে তা নির্দিষ্ট করা বলা যাচ্ছে না। কারণ, যে এলকায় ট্রাকটি খাদে পড়েছে, সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই।’
তবে আহত যাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮ টার দিকে ঘটেছে এই দুর্ঘটনা।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এ দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের স্বান্তনা জানানোর পাশাপাশি আহতদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে জাম গুলাম কাদির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গে নিহতদের দেহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারের সঙ্গে সরফরাজ বুগতির নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ইতোমধ্যে যোগাযোগ করছে বলেও জানা গেছে।
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনা বিরল কোনো ব্যপার নয়। প্রতি বছরই সড়ক দুর্ঘটনার কারণে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রাণহানি ঘটে। পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি, পাহাড়ি পথ এবং অদক্ষ চালক এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।