গেলো ৭ অক্টোবর কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই হামাস নির্মূলে গাজায় সেনা অভিযান শুরু করে তেল আবিব। বিদেশি সামরিক সহায়তা পেলেও হামাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে আর্থিকভাবে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ইসরাইলকে। শক্তি হারাচ্ছে অর্থনীতি।
যুদ্ধ পরিচালনা করতে এখন পর্যন্ত ইসরাইলের খরচ ছাড়াতে পারে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চাপ পড়েছে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের ওপর। দৈনিক তেল আবিবের খরচ হচ্ছে ১৬ কোটি ডলার। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ'র সঙ্গে সংঘাতে সীমান্তে যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তা যুক্ত করলে তেল আবিবের খরচ দ্বিগুণ হবে।
গাজা সীমান্তে ইসরাইলের বসতির ৪০০ থেকে সাড়ে ৫০০ কোটি ডলারের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তরে লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ'র সঙ্গে সংঘাতে বসতিগুলোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ থেকে ২০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে হঠাৎ এই যুদ্ধে সংকটে পড়ে গেছে ইসরাইলের শ্রমবাজারও।
১ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি কর্মী হারিয়েছে ইসরাইল, যারা দেশটির অবকাঠামো, পর্যটন, কৃষি ও সেবা খাতে কাজ করতো। বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে না পারায় শ্রমিক সংকটে কাজে এসেছে ধীরগতি। বন্ধ হয়ে গেছে ৫০ শতাংশ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ। ইসরাইল বিল্ডার্স এসোসিয়েশন বলছে, এখনও ১ লাখ ৪০ হাজার কর্মীর ঘাটতি আছে। তেল আবিবে ৪১ শতাংশ আর জেরুজালেমে ৫৮ শতাংশ অবকাঠামো খাতের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
এরমধ্যেই ফেব্রুয়ারিতে ইসরাইলের স্থানীয় ও বিদেশি মুদ্রার রেটিং একধাপ নামিয়েছে ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস। আরেক সংস্থা ফিচ বলছে, প্রবৃদ্ধি অনুপাতে ইসরাইলের ঋণ চলতি বছর এবং আগামী বছর বাড়বে। যুদ্ধ শুরুর পর গেলো বছরের শেষ প্রান্তিকে ইসরাইলের অর্থনীতি ২০ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। বিনিয়োগ কমে গেছে ৭০ শতাংশ।
স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির আবাসন খাতও। এই খাতে ফিলিস্তিনি কর্মী কমেছে ৯০ হাজার। গাজায় যুদ্ধ শুরুর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশের অর্থনীতিতে।