গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’: হোয়াইট হাউস
- আপডেট সময় : ১২:৫২:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪
- / ৪০১ বার পড়া হয়েছে
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের অবিরাম হামলায় এর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এরসঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও গাজায় দুর্ভিক্ষ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে এর আগে জানিয়েছে ইউএসএআইডি। আজ শুক্রবার (১২ই এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়ের গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়ে মার্কিন মূল্যায়নের ওপর ব্রিফিং করেছেন। এর আগে ইউএসএআইডি প্রধান সামান্থা পাওয়ার বলেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে বলে মূল্যায়ন করাটা ‘বিশ্বাসযোগ্য’।
আল জাজিরা বলছে, জ্যঁ-পিয়েরে পাওয়ারের মন্তব্য সরাসরি সম্বোধন করেননি। কিন্তু তিনি বারবার বলেছেন, গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি ‘আসন্ন’। তার এই বক্তব্য পাওয়ারের মূল্যায়নকে লঘু করে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, ‘আমরা গাজায় মানবিক সহায়তার’ পরিমাণ বাড়ানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজায় সাহায্য বহনকারী ট্রাকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা জানি গাজার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তাই আমরা অবশ্যই এই ধরনের প্রতিবেদনগুলো নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গাজায় সেই সাহায্য আরও বেশি বেশি করে পাঠাতে আমরা চব্বিশ ঘণ্টা, চব্বিশ ঘণ্টাই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, গাজায় সাহায্যের প্রবাহ আরও বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ‘ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকবে’।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের জাবালিয়া ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় পুলিশ প্রধান নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া ক্যাম্পে পুলিশ বাহিনীর প্রধান রুদওয়ান রুদওয়ান নিহত হয়েছেন।
হামাস বলেছে, রুদওয়ান উত্তর গাজা এলাকায় ত্রাণবাহী ট্রাক কনভয়ের নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। আর এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৬ হাজার মানুষ।
এছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরাইলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।