পহেলা বৈশাখ মানেই পাতে চায় পান্তা-ইলিশ। তাই বাঙ্গালির কাছে ইলিশ ছাড়া বাংলা নববর্ষ বরণের উৎসব অনেকটাই ফিঁকে। এ ছাড়া ভারতের কলকাতাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাঙালির খাবারের অন্যতম অনুষঙ্গ এই মাছ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আকাশচুম্বি ইলিশের দাম। বরিশালের পাইকারি বাজারে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেশি। আর ইলিশের ৫টি অভয়াশ্রমে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই মাছের সরবরাহ কমেছে।
তবে নববর্ষ ঘিরে বাজারে যেমন বেড়েছে ইলিশের চাহিদা, ঠিক তেমনি বেড়েছে এর দাম। দাম শুনে খালি হাতেই ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতারা। আর এ কারণে ইলিশের স্বাদ নেয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।
ক্রেতা একজন বলেন, 'বরিশালের মার্কেটে ইলিশের দাম একটু বেশি। ১৬শ' টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।'
বিক্রেতারা বলেন, 'দুই উৎসব মিলে এখন মাছের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। আর চৈত্র মাসে মাছের দাম একটু বেশিই থাকে।'
দেশে ইলিশের অভয়াশ্রম ৬ টি। এর মধ্যে ৪টি বরিশাল বিভাগে। এর ভেতর তিনটিতে এখন ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ। তাই ইলিশের সরবরাহ কম বলে জানান মৎস্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা ।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, 'বৈশ্বিক তাপমাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীর নাব্যতা সবকিছু মিলে ইলিশের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।'
বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম দিন দিন বাড়ছে। একই সাথে বাড়ছে ইলিশের দাম। দাম যেহেতু কোনোভাবে কমছে না সে ক্ষেত্রে ইলিশ কেনার ব্যাপারে ক্রেতাদের কিছুটা সচেতন থাকা উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, 'চাহিদা অনেক বেশি সেজন্য দাম বেড়েছে। ব্যাপারটা এমন নয়। বাজারে গেলেই মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এখানে দরকার সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ। সরাসরি বাজার কন্ট্রোল ও মনিটরিং করা।'
বরিশালে ইলিশের বাজারে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের পাইকারি দাম প্রতি মণ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ১২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ দাম প্রতি মণ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। ১ কেজি ওজনের দাম প্রতি মণ ৯৫ হাজার টাকা। ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের দাম প্রতি মণ ৭২ হাজার টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের প্রতি মণ ৫৫ হাজার টাকা। খুচরা বাজারে ইলিশের দাম আরও বেশি।