আগামীকাল (রোববার, ১৪ এপ্রিল) দেশব্যাপী পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন।
আজ (শনিবার, ১৩ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তারা এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানস্থল সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থল ওয়াচ টাওয়ারের আওতাধীন থাকবে। বোম ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত থাকবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আজ (শনিবার, ১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে যান চলাচল কিছুটা নিয়ন্ত্রিত রাখা হবে। আগামীকাল সন্ধ্যার মধ্যে সকল অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো হামলার শঙ্কা নেই।'
কমিশনার বলেন, ২০০১ সালে রমনা বটমূলে জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে প্রতিবারই বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়। কোনো হামলার শঙ্কা না থাকলেও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
র্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন বলেন, 'যেখানে জনসমাবেশ হবে এমনকি সব যায়গায় নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্ট থাকবে। যে কোন হামলা মোকাবিলায় কমান্ডো টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হবে। জঙ্গী হামলার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। গুজব ঠেকাতে সাইবার মনিটরিং টিম কাজ করবে।'
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবাই যেন উৎসব সুষ্ঠুভাবে উদযাপন করতে পারেন সে জন্য র্যাবসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বদা সজাগ রয়েছে।
র্যাব বলেন, পহেলা বৈশাখ কেন্দ্র করে প্রত্যেক বছরের ন্যায় এবারও র্যাব সারাদেশ ব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষে না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও টহল জোরদার করেছে। নববর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর টিএসসি শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, হাতিরঝিল, রমনা বটমূল, পূর্বাচল ৩০০ ফিটসহ যেসব এলাকায় মানুষ যাবে সেখানে পেট্রলসহ সুইপিং করা হবে। আমাদের গোয়েন্দা টিম সার্বিক নজরদাবি অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, ভার্চুয়াল জগতে যে কোনো ধরনের গুজব বা উসকামূলক তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য র্যাব সাইবার জগতে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থলে ইভটিজিং বা উত্যক্ত করার ঘটনা প্রতিরোধে মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ উত্যক্তের শিকার হলে র্যাব সদস্যদের জানাবেন। আমরা যথাযথ আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। র্যাব সদর দপ্তর থেকে কঠোরভাবে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে।
এদিকে, নতুন বর্ষকে বরণ করতে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রার প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে শেষ। শোভাযাত্রার পোস্টারও তৈরি হয়েছে কর্মশালার মাধ্যমে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার তৈরির জন্য যে কর্মশালা হয়, তা থেকে ৪০ জন শিল্পীর আঁকা পোস্টার নিয়ে হবে প্রদর্শনী। আজ ৩০ চৈত্র (১৩ মার্চ) শনিবার বিকেল ৪টায় চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।