রোহিঙ্গা সহায়তার তহবিল ঘাটতিতে উদ্বেগ বাড়ছে। ২০১৯ সালে চাহিদার বিপরীতে অর্থ মিলেছিল ৭৫ শতাংশ। তবে গত ৫ বছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এতে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে দাতা সংস্থাগুলোকে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে কাটছাটের পরামর্শ দিচ্ছে সরকার।
ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে বিশ্ববাসীর কাছে চলতি বছর ৮৫ কোটি ২৪ লাখ ডলারের চাহিদা দিয়েছে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ। এই অর্থের পরিমাণ গত বছরের চেয়ে কম হলেও বিশ্বজুড়েই মানবিক সংকট থাকায়, কত পাওয়া যাবে তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
২০১৯ সালে ৭৫ শতাংশ, ২০২০-এ ৫৯, ২০২১-এ ৭৩, ২০২২-এ ৬৯ এবং সবশেষ ২০২৩ সালে চাহিদার বিপরীতে সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ অর্থ পাওয়া গেছে রোহিঙ্গাদের জন্য। তহবিল ঘাটতির এ ধারা চলমান থাকলে আশ্রয় শিবিরে নতুন সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেছেন, রোহিঙ্গাদের যথেষ্ট অপুষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু কিছু সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ বলছে, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে রোহিঙ্গাদের অপুষ্টি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটি আবার বাড়ছে। দিনশেষে যদি এই অপুষ্টি থেকে যায় তাহলে শিশুমৃত্যুর হার বাড়তে পারে। এটি একটি শঙ্কার জায়গা।
চলমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকটের ওপর বিশ্বের মনোযোগ ধরে রাখাটাই চ্যালেঞ্জ মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় দাতা সংস্থাগুলোকে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে কাটছাটের পরামর্শ দিচ্ছে সরকার।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, যেহেতু রিসোর্সের ঘাটতি আছে, সেহেতু আমরা দাতা সংস্থাগুলোকে বলেছি তোমরা ডুপ্লিকেশন বা ওভারল্যাপ বা অন্যান্য ক্ষেত্রে কিভাবে করলে খরচ কমানো যায়...। কেননা আমরা সবাই জানি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ওভারহেড একটা বড় কস্ট। সুতরাং আমি মনে করি, এগুলো যদি লোকাল মাধ্যমে করা হয়, তাহলে হয়ত অপারেশনাল কস্টটা কমিয়ে আনা সম্ভব। এগুলো করে হয়ত ম্যানেজ করতে হবে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোহিঙ্গাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভূক্তের পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘ। তবে সরকারের দাবি, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলবে।