বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জনগণের পকেট কাটার কারণে এখন দেশে হাহাকার পড়েছে। অনাহার-অর্ধাহারে ক্ষুধার্ত মানুষ এবারের ঈদে চরম দুর্দশার মাঝে দিন কাটিয়েছে। বাজারে আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতির কারণে ভাত-তরকারী যোগাড় করা যেখানে কষ্টকর সেখানে ঈদের পোশাক কিনবে কিভাবে?
সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত একজন গামেন্ট শ্রমিক নিজের শিশু সন্তানের জন্য ফুটপাথ থেকে ফ্রক কিনতে পারেনি। চট্টগ্রামের ঈদ বাজারে গত বছরের তুলনায় এবার ত্রিশ শতাংশ কেনাকাটা কমেছে। এই পরিস্থিতি সারাদেশে। ঢাকাতে ধনীদের কেনাকাটা বাড়লেও নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। কাপড় ব্যবসায়ীরা শাড়ী, লুঙ্গি, পাঞ্জাবী তাদের টার্গেটের অর্ধেকও বিক্রি করতে পারেনি। অনেক ব্যবসায়ী ঈদের প্রাক্কালে বাকীতে কাপড় নিয়ে বিক্রি করার পর তার টাকা পরিশোধ করে। এখন তাদের কপালে হাত। আর আওয়ামী আমলে বিত্তশালী শ্রেণী মানেই টেন্ডারবাজ, সিন্ডিকেটবাজ ব্যক্তিরা যারা ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদপুষ্ট।
রিজভী আরও বলেন, আওয়ামী নেতাদের অনেকেই বলেছেন, দেশে বিত্তশালীদের সংখ্যা বেড়েছে, যারা মূলত: বেনজীর শ্রেণীর। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বিত্তশালী কারা? এই বিত্তশালী শ্রেণী হচ্ছে বেনজীর শ্রেণী। যারা বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীদের গুম, খুন করে প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে। এছাড়া মেগা প্রজেক্ট ও অবাধে ব্যাংক লুটের কথা এখন কল্পকাহিনীতে পরিণত হয়েছে যা অতি বাস্তব। এটা বাস্তব সত্য যে, দুর্নীতির সাথে ক্ষমতার উপরের দিকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। অত্যাচারী শাসকের পদতলে পিষ্ট আজ বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মিথ্যা ও সাজানো মামলায় ফরমায়েশী রায়ের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, বিএনপি নেতা ও সাবেক কমিশনার আনোয়ার পারভেজ বাদল এবং বিএনপি নেতা সাঈদ হোসেন সোহেল জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তাদের মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহবান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।