ইসরায়েলে ইরানের অভূতপূর্ব প্রতিশোধমূলক হামলার ঘটনায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে স্থল অভিযান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। খবর আনাদোলু এজেন্সি
ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৭০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পর মিশর সীমান্তবর্তী রাফাহকে ‘হামাসের শেষ শক্ত ঘাঁটি’ অভিহিত করে সেখানে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় নেতানিয়াহু সরকার। যেখানে প্রায় ১৪ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর বিরামহীন হামলা থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছেন।
তেল আবিবের এমন আক্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র বিরোধ দেখা গেলও সবকিছু কোনো তোয়াক্কা না করে গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দেন, রাফাহ আক্রমণের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ইরানের মুহুর্মুহু হামলার মুখে এবার নতুন যুদ্ধক্ষেত্র করার নীতি থেকে সরে আসছেন নেতানিয়াহু।
এর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক শক্তিধর ইরানের বিরুদ্ধে ঘনিষ্ঠমিত্র ইসরায়েল যদি কোনো পাল্টা হামলা চালায়, তবে তাতে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ইসরাইলের সম্ভাব্য পাল্টা হামলার বিষয়ে উচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড। একইসঙ্গে ইসরায়েলকেও সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে ইরান।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে শনিবার রাতে ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে আক্রমণাত্মক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে তেহরান। ইতোমধ্যে হামলায় যোগ দিয়েছে ইয়েমেনের ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলে হামলার পর দেশটি পাল্টা কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে তেহরানের বিপ্লবী গার্ড। ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, দামেস্কে ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত হবে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান থেকে যেমন হামলার কথা ছিল, তার সবচেয়ে খারাপটা দেখেছে বিশ্ব। এটি অবশ্যই পুরোপুরি আক্রমণ নয়। এটি ইরান কী করতে পারে সেটির প্রদর্শনমাত্র। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েলে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন ইসরাইলে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখা যায়নি।