মিয়ানমারের আটক সাবেক নেতা ও নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিকে কারাগার থেকে গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্র। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে অং সান সু চির ছেলে কিম অ্যারিস কারাগারে তার মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, গুরুতর মাড়ির রোগে ভুগছেন তিনি। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরে কয়েক বছর জেলে থাকায় তার খাবার খেতে সমস্যা হতো।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন জানান, প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষার জন্য শুধু অং সান সু চি নয় অন্যান্য বয়স্ক বন্দীদের জন্যও আমরা কাজ করছি।
এটা বোঝা যায় যে, ৭৮ বছর বয়সী অং সান সু চি এবং ৭২ বছর বয়সী রাষ্ট্রপতি ইউ উইন মিন্ট দু'জনকেই কারাগার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যদিও তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
সেই ১৯৮৯ সাল থেকে অং সান সু চি প্রায় দুই দশক ধরে কোনো না কোনো কারণে গ্রেপ্তার থেকেছেন। রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ঘুষ থেকে শুরু করে টেলিযোগাযোগ আইন লঙ্ঘন পর্যন্ত অপরাধের জন্য তিনি ২৭ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। যদিও অভিযোগগুলি তিনি অস্বীকার করেন।
মার্কিন গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অং সান সু চির ছেলে কিম অ্যারিস বলেন, কারাগারের বাইরে কেউই তাকে বেশিদিন দেখেনি। এখন খেতে না পেরে তার জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। বার্মা [মিয়ানমারের পূর্বের নাম] কারাগারে কতজন মানুষ প্রাণ হারায় তা বিবেচনা করে এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকারের একজন মুখপাত্র কিয়াও জাও, অং সান সু চি এবং মায়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি ইউ উইন মিন্টের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছিলেন। পরে তাকেও গৃহবন্দী করা হয়।
১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো গৃহবন্দি হন সু চি। ১৯৯১ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জেতেন। ২০১০ সালে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান তিনি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন। সামরিক বাহিনীর আংশিক সংস্কারের পর গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় তিনি ক্ষমতাগ্রহণ করেন। তবে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর এ প্রক্রিয়া আবারো থেমে যায়।