‘জাতির পিতা বেঁচে থাকলে দেশ আরও উন্নত হতো’
- আপডেট সময় : ০২:৫৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
- / ৩৮৫ বার পড়া হয়েছে
জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে বারবার ক্ষমতায় এসেছে, তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, এটাই দুর্ভাগ্য।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করলাম, তখন রিজার্ভ মানিও তেমন ছিল না। এশিয়াতে তখন খাদ্য মন্দা। আমাদের লক্ষ্য ছিল, আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলব না। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সব সময় বলতেন- আমরা কারো কাছে ভিক্ষা চাইব না, কারণ ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। আমরা মান-সম্মান নিয়েই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। সেই আদর্শে আমরা দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, পার্লামেন্টে যেদিন ঘোষণা দিলাম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তখন বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া বসা ছিলেন। আর সাইফুর রহমান উঠে দাঁড়িয়ে বলল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে খাদ্যের সাহায্য পাওয়া যাবে না। তাদের চিন্তাধারা ছিল আমরা প্রতিনিয়ত অন্যজনের কাছে হাত পেতে থাকবো। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব, আর ভিক্ষা চেয়ে খাবার খাব।
২০০১ সালে আমার সরকারের মেয়াদ শেষ হলে যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত আমরা রেখে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয়— ২০০৯ সালে যখন আমরা আবার ক্ষমতায় আসি তখন দেখি, ২৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত তো দূরের কথা বরং ৩০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল বাংলাদেশে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, ২০০১ সালে বিএনপি এসে সেগুলোর ওপর হামলা চালায়। অনেকের পোল্ট্রি ফার্মে বোমা মেরে মুরগি উড়িয়ে দিয়েছে। খামারিদের কাছ থেকে গরু নিয়ে খেয়ে ফেলেছে। পেঁপে থেকে শুরু করে সকল ফলের গাছ কেটে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে তারা এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। দেশের জন্য এটা কত ক্ষতি হবে সেই চিন্তা তাদের মাথায় ছিল না।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে আমরা গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলো জাতির পিতা করে দিয়ে গেছেন। গবেষণা ছাড়া উন্নত জাত বা অধিক ফলন ফলানো সম্ভব না।
এ সময় সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি খাতকে সব ধরনের সহায়তা করবে সরকার।’
আধুনিক মানসম্পন্ন খামার ও জবাইখানার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি অনুসরণ করতে হবে।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে আজ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনীতে শোভা পাচ্ছে নানা জাতের গাভী, ষাঁড়, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, হাঁস-মুরগি, সৌখিন পাখি ও পোষা প্রাণি। এছাড়া প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে ওষুধসামগ্রী, টিকা ও বিভিন্ন প্রযুক্তিসহ তিন শতাধিক স্টল রয়েছে।
সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ এর অন্যতম লক্ষ্য হলো প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি, দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টি, ক্ষুদ্র খামারি ও উদ্যোক্তাদের গবাদিপশু উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করা।’