আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভের লাগাম টানতে মার্কিন পুলিশ এখন পর্যন্ত ৭০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ছয় মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের এ যুদ্ধে হোয়াইট হাউসের অকুণ্ঠ সমর্থনের বিরুদ্ধে এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করতে শুরু করে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এরপর তা ক্রমশ বিস্তৃত হতে থাকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গত ১৯ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০৮ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করার পর বিক্ষোভ আরও নতুন করে বেগবান হয়েছে।
এর আগে ১৭ এপ্রিল কানেকটিকাটের নিউ হ্যাভেনের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪৪ জন, লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ৯৩ জন, বোস্টনের এমারসন কলেজে থেকে ১১৮ জন, নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ১০২ জন ও অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ৬৯ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ছাড়া গতকাল রোববার এক দিনেই আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের কলেজগুলো থেকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীও রয়েছেন, যিনি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে আগ্রহী। তিনি গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন।
এদিকে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বিক্ষোভ–আন্দোলন থেকে পিছু হটতে নারাজ। অব্যাহত গ্রেপ্তার অভিযানের পরেও বিক্ষোভ দমাতে পারছে না মার্কিন পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।
এনবিসি টুডে জানিয়েছে, আমেরিকায় ৪০টির বেশি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ক্যাম্পাসে তাঁবু তৈরি করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, ষাটের দশকের শেষের দিকে ভিয়েতনামে আমেরিকার আগ্রাসনবিরোধী ছাত্র বিক্ষোভের পর সম্ভবত সবচেয়ে বড় ছাত্র আন্দোলন হচ্ছে এবার।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তখন ২৪০ ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করা হয়। যাদের একাংশকে ফেরতও দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ চলমান যুদ্ধে নিহতও হয়েছে। এদিকে ৭ অক্টোবরের ওই ঘটনার পরদিন থেকে গাজায় হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।