বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ঘুমন্ত গ্রামবাসী
- আপডেট সময় : ০১:৫৫:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
- / ৩৯৪ বার পড়া হয়েছে
কেনিয়ায় প্রবল বর্ষণে বাঁধ ভেঙে আকস্মিক বন্যায় মারা গেছেন ১৭ শিশুসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ। রাতে ঘুমের মধ্যে পানিতে ভেসে গেছে মাই মাহিউর গ্রামের বাসিন্দারা। দেশটিতে অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বিমানবন্দরসহ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
টানা এক সপ্তাহের ভারি বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়া। এল নিনোর প্রভাবে চলতি মৌসুমে দেশটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে দেশটির বেশির ভাগ এলাকা। প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অতিবৃষ্টিতে দেশটির জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পানিতে পরিপূর্ণ। অতিরিক্ত পানি ছাড়ার পর নিম্নাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ নাইরোবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ৬ মে পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) গভীর রাতে নদীর একটি বাঁধ ভেঙে পানির তোড়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ভেসে যায় গ্রামবাসী। আকস্মিক প্রবল বন্যার সঙ্গে ভুমিধস ও গাছ উপড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। কাদায় আটকে ও ডুবে গেছে বহু মানুষ। খড়কুটো আঁকড়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন কয়েকজন।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনে বন্যার পানি পুরো ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কোনোরকমে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছি। আমার নবজাত শিশুটিকে বানের হাত থেকে রক্ষা করতে পারিনি। বড় মেয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরিবারের বাকি সদস্যদের কারও খোঁজ নেই।’
বৃষ্টি কমার কয়েক ঘণ্টা পর পানি নামতে শুরু করে। নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন বাসিন্দারা। আহত শতাধিক মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতদের সহায়তায় আড়াই কোটি ডলারের তহবিল গঠনের চেষ্টা করছে কেনিয়া সরকার।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্দেশ ওদেয়া হয়েছে। বন্যা ও ভূমিধসে হতাহতদের সুরক্ষায় সরকার থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
গত মাস থেকে প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় কেনিয়াজুড়ে প্রাণহানির দেড়শতাধিক ছাড়িয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে দেড় লাখের বেশি মানুষ। শুধু কেনিয়া নয়, পাশের দেশ তানজানিয়া, বুরুন্ডি, সোমালিয়া, উগান্ডাসহ পূর্ব আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়েছে।