Dhaka ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার, রিমান্ডে চাইবে পুলিশ

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দক্ষিণ পাইকপাড়ার আশ্রম থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করা হয়েছে। ওই আশ্রমে এখনও অভিযান চলছে। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামক বৃদ্ধাশ্রমের আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের নানা অপকর্ম নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর দেশব্যাপী তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার। নিজের পক্ষে কিছু তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তিও তুলে ধরেন। কিন্তু তার দাবি এবং উপস্থাপিত তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মিল্টনের দেওয়া বেশিরভাগ তথ্যই ছিল মিথ্যা।

এদিকে, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নামে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডে চাইবে পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাত ৯টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

৯০০ মরদেহ দাফনের দাবি মিল্টনের, প্রমাণ মিলে ৬৫টির
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে মিল্টন সমাদ্দার প্রায়ই দাবি করেন, তার আশ্রমে সব সময় আড়াইশ থেকে তিনশ অসুস্থ রোগী থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাস্তায় যারা মারা যান, তাদের দাফন করেন মিল্টন। আবার তার আশ্রমে অবস্থানকালেও অনেকে মারা যান।

মিল্টনের দাবি, সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ মরদেহ দাফন করেছেন তিনি। যাদের দাফন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৬০০ জন তার আশ্রমে মারা গেছেন। আর বাকি ৩০০ মরদেহ রাস্তা থেকে এনে তিনি দাফন করেছেন। এসব মরদেহ রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে দাবি তার।

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে মিল্টনের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। জানা যায়, মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মিল্টন সমাদ্দারের প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে সব মিলিয়ে ৫০টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এছাড়া রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১৫টির মতো মরদেহ দাফনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে আজিমপুর কবরস্থানে ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহের দাফন হয়নি বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সেখানকার দায়িত্বরতরা।

তাহলে প্রশ্ন ওঠে মিল্টন সমাদ্দারের দাবি অনুযায়ী ৯০০ মরদেহ দাফন করা হলে বাকি ৮৩৫টি মরদেহ কোথায় গেলো?

মরদেহে কাটাছেঁড়ার দাগ, মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেট দেন নিজেই
গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিল্টন সমাদ্দারের দক্ষিণ পাইকপাড়া আশ্রমের কাছেই বায়তুর সালাম জামে মসজিদে এক সময় তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা মরদেহ বিনামূল্যে গোসল করানো হতো। তার মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাকে এই সুবিধা দিয়েছিল। তবে গোসল করানোর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিটি মরদেহের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়ার দাগ শনাক্ত করেন। করোনার সময় এ বিষয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে প্রশ্ন করে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি ওই মসজিদে মরদেহ পাঠানো বন্ধ করে দেন।

স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, মিল্টন এক সময় বাসা ভাড়া শোধ করতে পারতেন না। এখন তিনি এগুলো করে কোটি কোটি টাকার মালিক। দামি গাড়িতে চড়েন। আমরা শুনেছি আড়ালে তিনি মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরি করেন।

তিনি আরও বলেন, রাস্তা থেকে মানুষ তুলে আনার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। যাদের কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ভালো থাকে, তাদের যথাযথ চিকিৎসা করানো হয়। তাদের জন্য ভালো খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর সুস্থ হলে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেওয়া হয়। সুস্থ মানুষ কিন্তু কিছুদিন পরে দেখি মারা যান।

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’-এ কাজ করেছেন—এমন একজন বলেন, ‘কোনো রোগী অসুস্থ হলে সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয় না। এখানে রেখেই চিকিৎসা করা হয়। কারণ, তিনি চান না কেউ পুরোপুরি সুস্থ হোক। এটা তার ব্যবসা।’

ওই ব্যক্তির কথার মিল পাওয়া যায় মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেটেও। যতজনকে দাফন করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের প্যাডে।

একাধিক ব্যক্তিকে মারধর, জমি দখলের অভিযোগ
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে মারধরের প্রমাণ মিলেছে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে। জানা গেছে, তার আশ্রমের ভেতরে রয়েছে নিজস্ব বন্দিশালা। সেখানে আছে লাঠিসোটা, পাইপসহ মারধরের নানা উপকরণ। চুন থেকে পান খসলেই তার লাঠিয়াল বাহিনী হামলে পড়ে।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামে ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরে শিকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধরের হাত থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় মিল্টন সমাদ্দারকে প্রধান আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। মামলার তদন্ত চলছে। আমরা মিল্টনের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছি। এখনো দেয়নি।’

মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার, রিমান্ডে চাইবে পুলিশ

আপডেট : ১০:১৪:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০২৪

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দক্ষিণ পাইকপাড়ার আশ্রম থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করা হয়েছে। ওই আশ্রমে এখনও অভিযান চলছে। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামক বৃদ্ধাশ্রমের আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের নানা অপকর্ম নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর দেশব্যাপী তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার। নিজের পক্ষে কিছু তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তিও তুলে ধরেন। কিন্তু তার দাবি এবং উপস্থাপিত তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মিল্টনের দেওয়া বেশিরভাগ তথ্যই ছিল মিথ্যা।

এদিকে, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নামে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডে চাইবে পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাত ৯টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

৯০০ মরদেহ দাফনের দাবি মিল্টনের, প্রমাণ মিলে ৬৫টির
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে মিল্টন সমাদ্দার প্রায়ই দাবি করেন, তার আশ্রমে সব সময় আড়াইশ থেকে তিনশ অসুস্থ রোগী থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাস্তায় যারা মারা যান, তাদের দাফন করেন মিল্টন। আবার তার আশ্রমে অবস্থানকালেও অনেকে মারা যান।

মিল্টনের দাবি, সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ মরদেহ দাফন করেছেন তিনি। যাদের দাফন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৬০০ জন তার আশ্রমে মারা গেছেন। আর বাকি ৩০০ মরদেহ রাস্তা থেকে এনে তিনি দাফন করেছেন। এসব মরদেহ রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে দাবি তার।

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে মিল্টনের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। জানা যায়, মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মিল্টন সমাদ্দারের প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে সব মিলিয়ে ৫০টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এছাড়া রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১৫টির মতো মরদেহ দাফনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে আজিমপুর কবরস্থানে ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহের দাফন হয়নি বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সেখানকার দায়িত্বরতরা।

তাহলে প্রশ্ন ওঠে মিল্টন সমাদ্দারের দাবি অনুযায়ী ৯০০ মরদেহ দাফন করা হলে বাকি ৮৩৫টি মরদেহ কোথায় গেলো?

মরদেহে কাটাছেঁড়ার দাগ, মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেট দেন নিজেই
গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিল্টন সমাদ্দারের দক্ষিণ পাইকপাড়া আশ্রমের কাছেই বায়তুর সালাম জামে মসজিদে এক সময় তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা মরদেহ বিনামূল্যে গোসল করানো হতো। তার মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাকে এই সুবিধা দিয়েছিল। তবে গোসল করানোর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিটি মরদেহের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়ার দাগ শনাক্ত করেন। করোনার সময় এ বিষয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে প্রশ্ন করে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি ওই মসজিদে মরদেহ পাঠানো বন্ধ করে দেন।

স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, মিল্টন এক সময় বাসা ভাড়া শোধ করতে পারতেন না। এখন তিনি এগুলো করে কোটি কোটি টাকার মালিক। দামি গাড়িতে চড়েন। আমরা শুনেছি আড়ালে তিনি মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরি করেন।

তিনি আরও বলেন, রাস্তা থেকে মানুষ তুলে আনার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। যাদের কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ভালো থাকে, তাদের যথাযথ চিকিৎসা করানো হয়। তাদের জন্য ভালো খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর সুস্থ হলে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেওয়া হয়। সুস্থ মানুষ কিন্তু কিছুদিন পরে দেখি মারা যান।

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’-এ কাজ করেছেন—এমন একজন বলেন, ‘কোনো রোগী অসুস্থ হলে সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয় না। এখানে রেখেই চিকিৎসা করা হয়। কারণ, তিনি চান না কেউ পুরোপুরি সুস্থ হোক। এটা তার ব্যবসা।’

ওই ব্যক্তির কথার মিল পাওয়া যায় মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেটেও। যতজনকে দাফন করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের প্যাডে।

একাধিক ব্যক্তিকে মারধর, জমি দখলের অভিযোগ
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে মারধরের প্রমাণ মিলেছে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে। জানা গেছে, তার আশ্রমের ভেতরে রয়েছে নিজস্ব বন্দিশালা। সেখানে আছে লাঠিসোটা, পাইপসহ মারধরের নানা উপকরণ। চুন থেকে পান খসলেই তার লাঠিয়াল বাহিনী হামলে পড়ে।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামে ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরে শিকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধরের হাত থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় মিল্টন সমাদ্দারকে প্রধান আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। মামলার তদন্ত চলছে। আমরা মিল্টনের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছি। এখনো দেয়নি।’