কেনিয়ায় ধারাবাহিক বৃষ্টি ও বন্যায় গত ১ মার্চ থেকে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৯১ জন। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সূত্র: সিএনএন।
নাইরোবির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মাই মাহিউ শহরের কাছে বন্যায় প্রায় ৭৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। স্থানীয়রা এবং সংবাদদাতারা সিএনএনকে জানান, রেলওয়ে সেতুর নিচে একটি আটকে থাকা টানেলের মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে এই বিপর্যয় ঘটেছে। ঘটনার ফলে এখন পর্যন্ত ৭১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেনিয়ার সরকারের মুখপাত্র আইজ্যাক মওয়াউরা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবার ভূমিধসে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আমরা সারাদেশে ৬৬ জনকে হারিয়েছি। এর মধ্যে ৬০ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৬ জন শিশু রয়েছে।
মওয়াউরা বলেন, বন্যার কারণে ৩০ হাজার ২১৪টি কেনিয়ান পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আর জনসংখ্যার হিসেবে বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৪২ জন। কেনিয়ার রাজধানীতে বাস্তুচ্যুতরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদিকে, ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে কেনিয়ার সরকার ঘোষণা করেছে, তারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য হাসপাতালের সব বিল বহন করবে। বিশেষ করে মঙ্গলবার যারা ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের। এছাড়া বাস্তুচ্যুতির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার পরিবারগুলোর আর্থিক দায়ও কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সিএনএন বলেছে, মাই মাহিউর একটি এলাকায় তীব্র গন্ধ ভেসে আসছে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস করে যে, উপড়ে যাওয়া গাছ এবং কাদার স্তূপের নীচে অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বাসিন্দা সিএনএনকে বলেন যে, তিনি একটি বিদ্যুতচালীন করাতের জন্য জ্বালানী সরবরাহ করেছিলেন। এটি দিয়ে উপড়ে যাওয়া গাছ কাটা হচ্ছে।
"সরকারকে আমাদের জন্য বড় এক্সকেভেটর পাঠাতে বলুন," তিনি বলেছিলেন।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে সেনা মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কেনিয়া স্মরণাতীতকালের ভয়াবহ খরার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে যার প্রভাবে কেনিয়ার অনেক অংশ বাজেভাবে প্রভাবিত হয়েছে। গবাদি পশু-পাখি, শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় দুর্ভিক্ষ এবং খাবার পানির তীব্র অভাব দেখা দেয়। কেনিয়ার শক্ত ও শুষ্ক মাটিতে সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে এই পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
ভারী বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি উপচে পড়ে সৃষ্ট বন্যায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে, অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। মানবিক সংস্থা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সহায়তা দিতে কাজ করছে কেনিয়ার সরকার।