দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম দীর্ঘমেয়াদে অতি উষ্ণতার কবলে পড়লো দেশের বড় অংশ। টানা ৩৩ দিন দেশের গড় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। একটানা তীব্র তাপ্রবাহকে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। আগামী বছরগুলোতে এর মাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। এমন পরিস্থিতিকে দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করে আগাম প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ তাদের।
গ্রীষ্মকালে গরম পরবে স্বাভাবিক এই চিন্তাটাই এবার অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে দেশবাসীর কাছে। মার্চের ৩১ তারিখ থেকে টানা ৩৩ দিন তীব্র তাপদাহে পুড়েছে দেশের প্রাণ ও প্রকৃতি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এই ভূখন্ডে এর আগে ১৯৪৮ সালে টানা ২৮ দিন তাপপ্রবাহ ছিলো। এরপর গেল বছর এপ্রিল ও মে মাস মিলিয়ে ২৩ দিন টানা ছিল তাপপ্রবাহ। সেই হিসেবে এবারের তাপপ্রবাহ ভেঙ্গেছে ৭৬ বছরের রেকর্ড।
চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। ১৬ই এপ্রিলের পর থেকে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা দেশের ৭৫ ভাগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে কখনোই দেশজুড়ে এমন তীব্র তাপপ্রবাহ হয়নি বলে জানান আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান।
এবার চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সবচেয়ে বেশি ১৪ দিন ছিল তাপপ্রবাহ। ৩০শে এপ্রিল চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রীর ঘরে উঠে। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এক গবেষণায় তাপপ্রবাহের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ২১ জেলা চিহ্নিত করেছে। তাপপ্রবাহকে দুর্যোগ বিবেচনা করে এখনই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রেড ক্রিসেন্ট এর পরিচালক ডিসিআরএম ইমাম জাফর সিকদার।
তাপপ্রবাহ বৃদ্ধির প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য সবুজায়ন এবং জলাধার বৃদ্ধি আগাম প্রস্তুতির কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন বুয়েট এবং জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তসরকার প্যানেলের সদস্যএ কে এম সাইফুল ইসলাম।
শিক্ষক, সরকারি বেসরকারি সব সংস্থা ছাড়াও নগরবাসীকেও এসব উদ্যোগে সম্পৃক্ত করতে বলেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।