নৈরাজ্য করলে ডাবল শিক্ষা পাবে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের
- আপডেট সময় : ০৯:৫৪:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
- / ৩৯৩ বার পড়া হয়েছে
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নৈরাজ্য করবে? একবার তো একটা শিক্ষা পেয়েছে, এবার ডাবল শিক্ষা পাবে। আমরা বসে নেই। আমরা সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত আছি। সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস নৈরাজ্য মোকাবিলায় আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করবো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র আছে, সতর্ক থাকতে হবে। কোনও সংঘাতে আমরা জড়াবো না। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবো। বাংলাদেশের যে গণতন্ত্র, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যার অবদান তিনি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এত চক্রান্তের মধ্যেও ৪২ শতাংশ ভোটার টার্ন আউট। আপনারা (বিএনপি), আপনাদের সমমনারা ভোটে জাননি তাহলে এত ভোটার কীভাবে এলো। উপজেলা নির্বাচনে ৩৬.১ শতাংশ ভোট পড়েছে একথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।
তিনি আরও বলেন, ধান কাটার মৌসুম চলছে, সেদিন (উপজেলা ভোটের দিন) অনেক জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও ভোট কম হতে পারে। কিন্তু নেত্রীর নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জে ভোট পড়েছে ৬৮ শতাংশ। কোথাও কোথাও একেবারেই স্বাভাবিক না, একটু কমই পড়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ও কিছু সাম্প্রদায়িক দলের ভোট বর্জনের মধ্যে যে ভোট পড়েছে সেখানে আমি একটা কথা বলতে চাই, বিএনপি সরকারের সময়ে হওয়া কোনও স্থানীয় নির্বাচন এত শান্তিপূর্ণ হয়েছে?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতি অতীতের তুলনায় আরও গতিশীল হয়েছে, সমৃদ্ধ হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে স্থানীয় নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। এত বিরোধিতা, ষড়যন্ত্রের মধ্যেও শেখ হাসিনা নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বাস্তবে বজায় রেখেছেন। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আমরা সেটাই দেখলাম।
বিএনপির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভুল, ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে বিএনপি কোনও কিছু আদায় করতে পারবে না। তারা মুখে চৌকস কথার ফুলঝুড়ি ছড়াবে আর ভেতরে ভেতরে চরম হতাশায় আচ্ছন্ন। তারা হাস্যকর কথা বলে চেষ্টা করছে দলকে চাঙা করার জন্য। কিন্তু হালে পানি পাচ্ছে না। যতদিন না তারা রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে ততদিন আরও জনবিচ্ছিন্ন হবে।
তিনি বলেন, দেশে প্রথমবারের মত পার্চেজিং ক্যাপাসিটি ইনডেক্স প্রকাশ করা হয়েছে। সে সূচক অনুযায়ী চলমান ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির চাপ, অনিশ্চয়তার মুখেও স্থিতিশীলতা দেখিয়ে সম্প্রসারণের পথে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে এ সূচক প্রকাশ করেছে। আমাদের নেত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে। আইএমএফের আরও সহযোগিতা পাওয়ার মত শক্ত অবস্থানে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা অনেকটা সফল। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, প্রতিদিন হু হু করে দ্রব্যমূল্য বাড়তো। কখনো নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। সফলতা আসবে, কারণ উদ্যোগটা আন্তরিক।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এ দিবসটি উদযাপনের জন্য যথাযথ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে তাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অনুকরণে কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। এ কর্মসূচি ইউনিয়ন পর্যন্ত আমরা পালন করবো। কারণ শেখ হাসিনা না এলে দেশে গণতন্ত্র থাকতো না, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ বিপন্ন হতো। যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল হতো না। রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতো না, মাতারবাড়ি হতো না। স্যাটেলাইট মহাকাশে পৌঁছে গেছে এটা শেখ হাসিনা এবং তার সন্তানের সাফল্য।
পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করতে রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না ভারত। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতের দয়ায় ক্ষমতায় বসিনি। ইলেকশনের সময় আমেরিকাসহ আরও কিছু দেশ ভূমিকা নিয়েছিলো। কিন্তু ভারত একেবারেই কথা বলেনি। একেবারেই নিরপেক্ষ ছিল। নিজের দেশকে খাটো করা গয়েশ্বরদের পক্ষেই সম্ভব। পঁচাত্তরের পর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম? তখন কি ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। কতবছর পর এসে, আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ক্ষমতার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছি আমাদের দেশের জনগণের ইচ্ছায়, কোনও বিদেশি শক্তির ইচ্ছায় নয়।
যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, আইন বিষয় সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।