আজকে নিজ দেশে থেকে আমরা পরবাসী: মির্জা ফখরুল
- আপডেট সময় : ১১:১৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪
- / ৩৯০ বার পড়া হয়েছে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে নিজ দেশে থেকে আমরা পরবাসী হয়েছি। আজকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেলে বা এলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে বসিয়ে রাখা হয়। আসলে দেশ কি আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে? না। দেশ চালাচ্ছে অদৃশ্য শক্তি।
শনিবার (১১ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানাসহ আশপাশের জেলার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
ফখরুল বলেন, আজকে সারাদেশ কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া চাকরি হয় না। বিসিএস পাস করার পরও চাকরি হচ্ছে না। আজকে চাকরির জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়, তারা বিএনপি করে কি না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া শুধু নির্যাতিত নেত্রী নন, তিনি গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী। সারাজীবন যিনি দেশ ও জনগণের জন্য ত্যাগ শিকার করেছেন, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, আজকে দানবীয় সরকারের প্রতিহিংসার বশবর্তী হয় তাকে বন্দি করে রেখেছে। যার সাজা হয়েছিল ৫ বছর। উচ্চ আদালতে তা ১০ বছর করা হয়েছে। এরকম মামলায় অনেকে জামিন পেলেও দেওয়া হয়নি। তিনি অসুস্থ। দেশ-বিদেশ থেকে সবাই তার মুক্তি দাবি করলেও দেওয়া হচ্ছে না। কারণ তিনি মুক্ত হলে তার ডাকে সাড়া দিয়ে জনগণ সব শৃঙ্খল ভেঙে ফেলবে, উপড়ে ফেলবে সব সব অন্যায় ও অবিচার।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আটক রাখা হয়েছে দলের হাজারো নেতাকর্মীকে। অনেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতকে দলীয় কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ঈশ্বরদীতে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে এরা ক্ষমতার টিকে থাকতে চায়। কি নিদারুণভাবে ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পণ্ড করা হয়েছে। অন্যায় করে জুলুম করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। আমরা যখন যুবক ছিলাম লড়াই করে এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু আজ সে স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত। ২০০৮ সাল থেকে মানুষ আর ভোট দিতে পারে না। অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকার আবারও ভিন্ন মেড়কে বাকশাল কায়েম করতে চায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আবার সন্ত্রাস করবেন না, তাহলে ডাবল শিক্ষা দেব। সন্ত্রাস বিএনপি করে না। আপনারা করেন। সন্ত্রাসের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জন্ম। মওলানা ভাসানীকে পিটিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। ডেপুটি স্পিকারকে পিটিয়ে আপনারাই হত্যা করেছেন।
তিনি বলেন, আজকে দুর্ভাগ্য, যে জাতি গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা জন্য যুদ্ধ করেছিল সে অধিকার থেকে বাংলাদেশ আজ বঞ্চিত। আজকে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে। ট্রেনের ভাড়া, বাস ভাড়া, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস-পানির দাম বেড়েই চলছে। অপরদিকে লুটপাট হচ্ছে দেশের অর্থনীতি, লুটপাট হচ্ছে ব্যাংক। আজকে নতুন নতুন আইন করছে লুটেরাদের স্বার্থে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নতুন নতুন ফর্মূলা করা হচ্ছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের নাম ডামি নির্বাচন। ডামি নির্বাচনে গৃহপালিত দলগুলোর সঙ্গে চলে দেনদরবার। এত আসন না পেলে সে দলগুলো আবার নির্বাচন না যাওয়ারও হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, সরকার বলে তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তাহলে এরশাদ ও ইয়াহিয়া কি করেছেন? তাদের আসলে কোনো লজ্জা নেই। দেশটাকে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে। যেমনি চাইবে তেমনি চলবে। কিন্তু তা হবে না। জনগণ যা চাইবে সেভাবেই দেশ চলবে।
যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল, সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ, দক্ষিণের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।