ঢাকা ১২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নির্বাচনের পর সংকট কাটেনি, আরও বেড়েছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৪:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
  • / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট উতরে যায়নি বরং আরও বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখনি যদি সরকারের অনুধাবন না করে তাহলে সামনে সংকট আর ঘনিভূত হবে।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

ডামি নির্বাচন হচ্ছে, তারাই প্রার্থী বাছাই, তারাই বিরোধীদল কারা হবে নির্ধারণ করে দিচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকারের কোনও জবাদিহিতা নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাদের মধ্যে এমন দাম্ভিকতা সৃষ্টি হয়েছে যে, আমাদের তো জনগণের কোনো দরকার নেই। জনগণ কি হলো না হলো তা নিয়ে চিন্তা নেই। ক্ষমতা ঠিক থাকতে পারলে চলে আওয়ামী লীগের।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার পরিকল্পিতভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করেছে, এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতি মেরুদণ্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সরকারের এমপি মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা খারাপ।

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন ঢাকা সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, কে এলো তাতে ইন্টারেস্ট (আগ্রহ) নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে।

ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপির বহু নেতা-কর্মীকে একতরফা সাজা দিয়েছে আদালত। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে বিএনপি। বিনা শুনানিতেও সাজা দিয়েছে সরকার। এখনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা কারাগারে রয়েছেন। চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে সাজা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ করতে দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসার জায়গা হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

দেশে প্রবেশের সময় আমদানি পণ্যের মান যাচাই করা উচিত মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার তা করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান।

‘এ সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাদের ভেতরে দম্ভ কাজ করছে। কারণ তাদের জনগণের কোনো দরকার নেই। ’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এটি বললে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। কিন্তু এটি ট্রু (সত্য)।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ প্রকাশ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অনিয়ম দুর্নীতি এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি তার নিন্দা জানায়। অর্থনীতিখাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি চলছে, ব্যাংকখাত ধ্বংস হয়ে গেছে। নিবর্তনমূলক আচরণ করা হচ্ছে। নিবর্তনমূলক আইন প্রত্যাহারের দাবি ‌

স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্য খাতেরও ভয়াবহ অবস্থা, এটা আশঙ্কাজনক। সরকার জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না, অনীহা দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে আমদানি করা সব পণ্য দেশে প্রবেশের পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। যদিও সরকার করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ভারতের ৫২৭টি পণ্যে বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেছে বলেও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল

মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের কাছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই, সরকারের মধ্যে দাম্ভিকতা তৈরি হয়েছে সেজন্য জনগণের সমস্যা গুরুত্ব পাচ্ছে না, ক্ষমতায় টিকে থাকলেই হলো। একটা গোত্র তৈরি করেছে সরকার, যারা তাদের ক্ষমতায় রাখবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচনের পর সংকট কাটেনি, আরও বেড়েছে: ফখরুল

আপডেট সময় : ০৩:৩৪:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট উতরে যায়নি বরং আরও বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখনি যদি সরকারের অনুধাবন না করে তাহলে সামনে সংকট আর ঘনিভূত হবে।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

ডামি নির্বাচন হচ্ছে, তারাই প্রার্থী বাছাই, তারাই বিরোধীদল কারা হবে নির্ধারণ করে দিচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকারের কোনও জবাদিহিতা নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাদের মধ্যে এমন দাম্ভিকতা সৃষ্টি হয়েছে যে, আমাদের তো জনগণের কোনো দরকার নেই। জনগণ কি হলো না হলো তা নিয়ে চিন্তা নেই। ক্ষমতা ঠিক থাকতে পারলে চলে আওয়ামী লীগের।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার পরিকল্পিতভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করেছে, এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতি মেরুদণ্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সরকারের এমপি মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা খারাপ।

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন ঢাকা সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, কে এলো তাতে ইন্টারেস্ট (আগ্রহ) নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে।

ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপির বহু নেতা-কর্মীকে একতরফা সাজা দিয়েছে আদালত। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে বিএনপি। বিনা শুনানিতেও সাজা দিয়েছে সরকার। এখনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা কারাগারে রয়েছেন। চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে সাজা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ করতে দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসার জায়গা হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

দেশে প্রবেশের সময় আমদানি পণ্যের মান যাচাই করা উচিত মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার তা করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান।

‘এ সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাদের ভেতরে দম্ভ কাজ করছে। কারণ তাদের জনগণের কোনো দরকার নেই। ’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এটি বললে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। কিন্তু এটি ট্রু (সত্য)।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ প্রকাশ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অনিয়ম দুর্নীতি এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি তার নিন্দা জানায়। অর্থনীতিখাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি চলছে, ব্যাংকখাত ধ্বংস হয়ে গেছে। নিবর্তনমূলক আচরণ করা হচ্ছে। নিবর্তনমূলক আইন প্রত্যাহারের দাবি ‌

স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্য খাতেরও ভয়াবহ অবস্থা, এটা আশঙ্কাজনক। সরকার জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না, অনীহা দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে আমদানি করা সব পণ্য দেশে প্রবেশের পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। যদিও সরকার করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ভারতের ৫২৭টি পণ্যে বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেছে বলেও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল

মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের কাছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই, কোনো ম্যান্ডেট নেই, সরকারের মধ্যে দাম্ভিকতা তৈরি হয়েছে সেজন্য জনগণের সমস্যা গুরুত্ব পাচ্ছে না, ক্ষমতায় টিকে থাকলেই হলো। একটা গোত্র তৈরি করেছে সরকার, যারা তাদের ক্ষমতায় রাখবে।