আমাদের মা সব জানে। সন্তানদের স্নেহ, ভালোবাসা, তাদের শিক্ষায় সাম্যতা রাখতে পরিবারে মায়ের ভূমিকা সবার ওপরে। মা জানেন কোন সন্তানকে কেমন করে গড়ে তুলতে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রে নিজেকে মানিয়ে চলা, জীবনে সংযমী হওয়ার মন্ত্রগুলো মায়ের শিখিয়ে দেয়া।
গ্রীষ্মে কিংবা বর্ষায় ছাতা হয়ে সন্তানের মাথার ওপর থাকেন, কেবল একজন। সন্তানকে সমস্ত ঝড় সামলে বুকে যখের ধনের মতো আগলে রাখেন রাখেন, সেই একজনই। জন্মলগ্নের শুরু থেকে জীবনের প্রতিটি ধাপে বিপদে আপদে বন্ধু হয়ে ভালোবাসা আর শাসনে আকাবাঁকা পথগুলোকে পিচঢালা পথের মতোন মসৃণ করে দেয় 'মা'।
কর্মজীবী মায়েরা কাজের জায়গায় ঘাম ঝরাতে গিয়েও উদ্বিগ্ন থাকেন সন্তানের জন্য। ঘরে ফিরে নিজের ক্লান্তি ভুলেন সন্তানের আবদার মিটিয়ে। যারা ঘরেই থাকেন, তাদের তো দিবস-রাত্রি ভাবনা ও শ্রমের বিনিয়োগ সন্তানের জন্যেই। কোন মা এই বিনিয়োগের বিনিময় মূল্য চান না। সন্তানের সাফল্যের প্রবৃদ্ধিই দেখতে চান।
মায়েরা বলেন, আমরা অনেক যুদ্ধ করে ও শাসন পেয়ে বড় হয়েছি। কিন্তু এখনকার বাচ্চাদের সাথে এমনটা করা যাবে না। কারণ এই প্রজন্মটা অনেক অভিমানী। ভবিষ্যতে সন্তান আমাদের জন কী করবে আর না করবে, এমনটা কখনো ভাবি না। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন নিঃস্বার্থভাবেই সন্তানদের জন্য করে যাবো। মায়ের আদর-ভালোবাসা লাভ বা বিনিয়োগ দিয়ে বিবেচনা করা যাবে না। সকল বিবেচনার ঊর্ধ্বে।
তবে পৃথিবীর সবকিছু থেকে যদিও বা দূরে থাকা যায় কিন্তু মায়ের সাথে সন্তানের যে ভৌগোলিক দূরত্ব, তা মেনে নেয়া আর মানিয়ে নেয়ায় মা সন্তানের বুকের হাহাকার শোনা কি যায় এই নিষ্ঠুর বসুন্ধরায়?
এক মা বলেন, ওদের ভালো রাখার জন্য আজ ওরা দূরে। আমার সময় পার হয় না। ওদের এখন আর কাছে পাই না। তবে সন্তান কাছে না থাকলে ভালো থাকা যায় না।
জীবনে দুর্যোগ আসে। সেখান থেকে উঠে দাঁড়াতে যাকে পাশে চাই, তিনি- মা। মায়ের কাছে যাদু আছে। সংসারের আর্থিক সংকট মেটাতে তাকে সামষ্টিক ও ব্যষ্টিক অর্থনীতি জানতে হয় না। তার নিজেরই জানা আছে অর্থ সূত্র। পরিবার আঁচ করতে পারে না অর্থযোগের মন্দাকাল। সন্তানের কোন আবদারই শূন্য হাতে ফিরে আসে না। তাইতো মা শূন্য ঘরে শান্তির সুখ ও শান্তির প্রবৃদ্ধির টানাপোড়েন কেবল সন্তানকেই আদ্র করে।