ঢাকা ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নিষিদ্ধ হচ্ছে ভারতীয় ব্র্যান্ড এমডিএইচ ও এভারেস্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • / ৪১৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মুখরোচক কোন খাবারের কথা যখনই আসে, এর সঙ্গে মশলার ভূমিকার কথা তো আসবেই। এই মশলা শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, যোগ করে পুষ্টিগুণও। কিন্তু যখন জানবেন, এই মশলা থেকে হতে পারে ক্যান্সারও?

এমনই অভিযোগ উঠেছে ভারতের সর্বাধিক বিক্রিত আইকনিক মশলা ব্র্যান্ড এভারেস্ট আর এমডিএইচ’র বিরুদ্ধে। এরপর থেকে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে একের পর এক দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা।

দশকের পর দশক ধরে রান্নাঘরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পরিচিত ভারতের মশলা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এমডিএইচ ও এভারেস্ট। রান্নাঘর থেকে রেস্টুরেন্টে সারাবিশ্বে যেকোন রান্নায় ব্যবহৃত হয় ভারতের এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা। সম্প্রতি এই মশলায় ক্যান্সারের ঝুঁকি আছে এমন কীটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ এনে মশলা কেনা বন্ধ করে তদন্তের দাবি করে হংকংয়ের খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, মশলায় কার্সিনোজেনিক কীটনাশক ইথিলিন অক্সাইড ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর থেকে তোপের মুখে পড়েছে মশলা প্রস্তুতকারক এই দুই ব্র্যান্ড। হংকংয়ের পর এই এভারেস্ট আর এমডিএইচের কয়েকটি মশলা নিষিদ্ধ করেছে সিঙ্গাপুর।

যদিও দুই ব্র্যান্ড বারবারই বলে আসছে তাদের মশলা শতভাগ নিরাপদ। এমডিএইচ বলছে, মজুত, প্রক্রিয়াজাতকরণ কিংবা প্যাকেজিং, কোন ধাপেই মশলায় ইথিলিন অক্সাইড ব্যবহার করে না তারা। যুক্তরাষ্ট্র, মালদ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া আর ভারত কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে তদন্ত করছে। ক্যান্সার গবেষণার আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুযায়ী, ইথিলিন অক্সাইড গ্রুপ ওয়ান কার্সিনোজেন যা থেকে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে যার মধ্যে আছে স্তন ক্যান্সার।

সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স জানায়, এর আগে ব্যাক্টেরিয়া আছে এমন অভিযোগে ২০২১ সাল থেকে এমডিএইচ ব্র্যান্ডের মশলার সাড়ে ১৪ শতাংশ শিপমেন্ট কমিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষ সালমোনেলা ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি পেয়ে এমডিএইচ’এর মশলার ২০ শতাংশ শিপমেন্ট বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২-২৩ অর্থবছরে শিপমেন্ট কমে ১৫ শতাংশ। এভারেস্টের মশলার শিপমেন্ট ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমেছিল প্রায় ৪ শতাংশ।

জিওন মার্কেট রিসার্চ বলছে, বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম মশলা প্রস্তুতকারক দেশ ভারত। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি আর রপ্তানিতে ভালো অবস্থানে দেশটি। ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ মশলার বাজার ছিল ১ হাজার কোটি ডলারের। ভারতের মশলা বোর্ড বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪শ’ কোটি ডলারের মশলা রপ্তানি করেছে দেশটি।

বিতর্কিত দুই ব্র্যান্ডের মধ্যে নয়াদিল্লি ভিত্তিক এমডিএইচ ১৯১৯ সালে ভারতে ব্যবসা শুরু করে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এমডিএইচের পণ্য ৬২ টি। ভারতে ৫টি কারখানা আছে এই ব্র্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা আর যুক্তরাজ্যের ৪ লাখের বেশি খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি হয় এই ব্র্যান্ডের মশলা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠানের আয় ছিল ২৬ কোটি ডলার।

অন্যদিকে, ১৯৬৭ সালে মাত্র তিনটি পণ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে এভারেস্ট। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এই ব্র্যান্ডের ৫২ টি পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশসহ বিশ্বের ৮০ টি দেশে বিক্রি হয়। প্রায় ২ কোটি ঘরে এভারেস্টের মশলা প্রতিদিন ব্যবহৃত হয়। প্রতি বছর বিক্রি হয় মশলার ৩৭০ কোটি প্যাকেট।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিষিদ্ধ হচ্ছে ভারতীয় ব্র্যান্ড এমডিএইচ ও এভারেস্ট

আপডেট সময় : ০১:৪৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

মুখরোচক কোন খাবারের কথা যখনই আসে, এর সঙ্গে মশলার ভূমিকার কথা তো আসবেই। এই মশলা শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, যোগ করে পুষ্টিগুণও। কিন্তু যখন জানবেন, এই মশলা থেকে হতে পারে ক্যান্সারও?

এমনই অভিযোগ উঠেছে ভারতের সর্বাধিক বিক্রিত আইকনিক মশলা ব্র্যান্ড এভারেস্ট আর এমডিএইচ’র বিরুদ্ধে। এরপর থেকে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে একের পর এক দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা।

দশকের পর দশক ধরে রান্নাঘরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পরিচিত ভারতের মশলা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এমডিএইচ ও এভারেস্ট। রান্নাঘর থেকে রেস্টুরেন্টে সারাবিশ্বে যেকোন রান্নায় ব্যবহৃত হয় ভারতের এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা। সম্প্রতি এই মশলায় ক্যান্সারের ঝুঁকি আছে এমন কীটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ এনে মশলা কেনা বন্ধ করে তদন্তের দাবি করে হংকংয়ের খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, মশলায় কার্সিনোজেনিক কীটনাশক ইথিলিন অক্সাইড ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর থেকে তোপের মুখে পড়েছে মশলা প্রস্তুতকারক এই দুই ব্র্যান্ড। হংকংয়ের পর এই এভারেস্ট আর এমডিএইচের কয়েকটি মশলা নিষিদ্ধ করেছে সিঙ্গাপুর।

যদিও দুই ব্র্যান্ড বারবারই বলে আসছে তাদের মশলা শতভাগ নিরাপদ। এমডিএইচ বলছে, মজুত, প্রক্রিয়াজাতকরণ কিংবা প্যাকেজিং, কোন ধাপেই মশলায় ইথিলিন অক্সাইড ব্যবহার করে না তারা। যুক্তরাষ্ট্র, মালদ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া আর ভারত কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে তদন্ত করছে। ক্যান্সার গবেষণার আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুযায়ী, ইথিলিন অক্সাইড গ্রুপ ওয়ান কার্সিনোজেন যা থেকে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে যার মধ্যে আছে স্তন ক্যান্সার।

সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স জানায়, এর আগে ব্যাক্টেরিয়া আছে এমন অভিযোগে ২০২১ সাল থেকে এমডিএইচ ব্র্যান্ডের মশলার সাড়ে ১৪ শতাংশ শিপমেন্ট কমিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষ সালমোনেলা ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি পেয়ে এমডিএইচ’এর মশলার ২০ শতাংশ শিপমেন্ট বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২-২৩ অর্থবছরে শিপমেন্ট কমে ১৫ শতাংশ। এভারেস্টের মশলার শিপমেন্ট ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমেছিল প্রায় ৪ শতাংশ।

জিওন মার্কেট রিসার্চ বলছে, বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম মশলা প্রস্তুতকারক দেশ ভারত। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি আর রপ্তানিতে ভালো অবস্থানে দেশটি। ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ মশলার বাজার ছিল ১ হাজার কোটি ডলারের। ভারতের মশলা বোর্ড বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪শ’ কোটি ডলারের মশলা রপ্তানি করেছে দেশটি।

বিতর্কিত দুই ব্র্যান্ডের মধ্যে নয়াদিল্লি ভিত্তিক এমডিএইচ ১৯১৯ সালে ভারতে ব্যবসা শুরু করে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এমডিএইচের পণ্য ৬২ টি। ভারতে ৫টি কারখানা আছে এই ব্র্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা আর যুক্তরাজ্যের ৪ লাখের বেশি খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি হয় এই ব্র্যান্ডের মশলা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠানের আয় ছিল ২৬ কোটি ডলার।

অন্যদিকে, ১৯৬৭ সালে মাত্র তিনটি পণ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে এভারেস্ট। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এই ব্র্যান্ডের ৫২ টি পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশসহ বিশ্বের ৮০ টি দেশে বিক্রি হয়। প্রায় ২ কোটি ঘরে এভারেস্টের মশলা প্রতিদিন ব্যবহৃত হয়। প্রতি বছর বিক্রি হয় মশলার ৩৭০ কোটি প্যাকেট।