ঢাকা ০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘রিজার্ভ ও টাকার দরপতনের সঙ্গে সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৮:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
  • / ৪০৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রিজার্ভের পতন ও টাকার দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।

বুধবার (১৫ মে) দুপুর ১২টায় রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, আমদানি-রপ্তানির নামে ডলার পাচার ও উচ্চ-দ্রব্যমূল্যে জনগণের চরম ভোগান্তির প্রতিবাদে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এবি পার্টি।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এ সরকার কম গণতন্ত্র, বেশি উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে দেশের মানুষ ও বুদ্ধিজীবী মহলকে বোঝাতে চেয়েছে তারা দেশকে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের মতো উন্নত দেশে পরিণত করবেন। তাদের কাছে গণতন্ত্র, মানবাধিকার গুরুত্বপূর্ণ নয়, তথাকথিত উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে সরকার দলীয় লোকজন ও কিছু আমলা। প্রকৃতপক্ষে এখন আমরা কি দেখতে পাচ্ছি, দেশে রিজার্ভের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলারে, যদিও সরকার বলছে এর পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আইএমএফ সহ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ রয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, বহু বছর ধরে দেশে ঘাটতি বাজেট দেওয়া হচ্ছে, ব্যাংকগুলো লুটপাট হয়েছে। সিপিডি বলছে, ৯২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হয়েছে ২৪টি পার্টিকুলার অনিয়মের মাধ্যমে, যা বাংলাদেশের ব্যাংকের গোচরে হয়েছে। খেলাপি ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকার উপরে, যা ২০০৮ সালে ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এ সরকার ক্ষমতায় অবৈধভাবে আঁকড়ে থাকার সুবিধার্থে সরকারি চাকরিজীবীদের খুশি রাখতে তাদের বেতন-ভাতা বাড়িয়েছে। শত শত কর্মকর্তাকে বসিয়ে রেখে জনগণের টাকায় বেতন দেওয়া হচ্ছে, যাদের কোনো কাজ নেই।

দলের সদস্যসচিব বলেন, বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের বিষয় তো পৃথিবীতে অনন্য রেকর্ড গড়ার মতো। এসব অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মূল কারণই হচ্ছে একটি অনির্বাচিত দখলদার সরকারের ক্ষমতায় বসে থাকা।

ব্রিফিংয়ে দলের আহ্বায়ক সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এটা সত্য, কিন্তু আসলে কি উন্নয়ন হয়েছে? নাকি উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, পাঁচটি ধানে যদি একটি চাল উৎপাদন হয় তাকে আমরা কি উন্নয়ন হিসেবে গ্রহণ করব? কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে, যা সরকারের বিভিন্ন সিন্ডিকেট সদস্যরা করেছে।

দলের অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ বলেন, দেশের আর্থিক সংকট শুরু হয়েছে রাজনৈতিকভাবে। এর সমাধানও রাজনৈতিকভাবে হতে হবে। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ২০১০ সালে শেয়ার বাজার লুটপাট করা হয়েছে, যার ফলে দেশের মানুষের কান্না আমরা দেখতে পেয়েছি। বর্তমান সব আর্থিক সংকট এ ধরনের রাজনৈতিক লুটপাটের মাধ্যমেই হয়েছে। কাজেই পরিকল্পিতভাবে যারা দেশের মানুষের শেয়ারবাজারের টাকা, ব্যাংকের টাকা, ঋণের টাকা লুটপাট করেছে তাদের পতন ছাড়া সংকট উত্তরণের কোনো উপায় নেই।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘রিজার্ভ ও টাকার দরপতনের সঙ্গে সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছে’

আপডেট সময় : ০৩:৩৮:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

রিজার্ভের পতন ও টাকার দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।

বুধবার (১৫ মে) দুপুর ১২টায় রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, আমদানি-রপ্তানির নামে ডলার পাচার ও উচ্চ-দ্রব্যমূল্যে জনগণের চরম ভোগান্তির প্রতিবাদে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এবি পার্টি।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এ সরকার কম গণতন্ত্র, বেশি উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে দেশের মানুষ ও বুদ্ধিজীবী মহলকে বোঝাতে চেয়েছে তারা দেশকে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের মতো উন্নত দেশে পরিণত করবেন। তাদের কাছে গণতন্ত্র, মানবাধিকার গুরুত্বপূর্ণ নয়, তথাকথিত উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে সরকার দলীয় লোকজন ও কিছু আমলা। প্রকৃতপক্ষে এখন আমরা কি দেখতে পাচ্ছি, দেশে রিজার্ভের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলারে, যদিও সরকার বলছে এর পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আইএমএফ সহ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ রয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, বহু বছর ধরে দেশে ঘাটতি বাজেট দেওয়া হচ্ছে, ব্যাংকগুলো লুটপাট হয়েছে। সিপিডি বলছে, ৯২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হয়েছে ২৪টি পার্টিকুলার অনিয়মের মাধ্যমে, যা বাংলাদেশের ব্যাংকের গোচরে হয়েছে। খেলাপি ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকার উপরে, যা ২০০৮ সালে ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এ সরকার ক্ষমতায় অবৈধভাবে আঁকড়ে থাকার সুবিধার্থে সরকারি চাকরিজীবীদের খুশি রাখতে তাদের বেতন-ভাতা বাড়িয়েছে। শত শত কর্মকর্তাকে বসিয়ে রেখে জনগণের টাকায় বেতন দেওয়া হচ্ছে, যাদের কোনো কাজ নেই।

দলের সদস্যসচিব বলেন, বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের বিষয় তো পৃথিবীতে অনন্য রেকর্ড গড়ার মতো। এসব অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মূল কারণই হচ্ছে একটি অনির্বাচিত দখলদার সরকারের ক্ষমতায় বসে থাকা।

ব্রিফিংয়ে দলের আহ্বায়ক সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এটা সত্য, কিন্তু আসলে কি উন্নয়ন হয়েছে? নাকি উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, পাঁচটি ধানে যদি একটি চাল উৎপাদন হয় তাকে আমরা কি উন্নয়ন হিসেবে গ্রহণ করব? কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে, যা সরকারের বিভিন্ন সিন্ডিকেট সদস্যরা করেছে।

দলের অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ বলেন, দেশের আর্থিক সংকট শুরু হয়েছে রাজনৈতিকভাবে। এর সমাধানও রাজনৈতিকভাবে হতে হবে। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ২০১০ সালে শেয়ার বাজার লুটপাট করা হয়েছে, যার ফলে দেশের মানুষের কান্না আমরা দেখতে পেয়েছি। বর্তমান সব আর্থিক সংকট এ ধরনের রাজনৈতিক লুটপাটের মাধ্যমেই হয়েছে। কাজেই পরিকল্পিতভাবে যারা দেশের মানুষের শেয়ারবাজারের টাকা, ব্যাংকের টাকা, ঋণের টাকা লুটপাট করেছে তাদের পতন ছাড়া সংকট উত্তরণের কোনো উপায় নেই।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।