বাজারে মাছ, মাংস, ডাল, ডিম। মশলা কিংবা সবজি। সব পাবেন ভরপুর। শুধু মন ভরে কেনা হবে না। সরবরাহ ঠিক থাকলেও হঠাৎ দাম বেড়েছে ডিম, মাংস, আলু ও পেঁয়াজসহ অধিকাংশ নিত্যপণ্যের। তাতে এক সপ্তাহে ছোট পরিবারের বাজার খরচ বেড়েছে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তদারকির ঘাটতিকে দায়ী করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। মূল্যস্ফীতি, মুদ্রাস্ফীতির মতো জটিল হিসাব বুঝে না সাধারণ ক্রেতারা।
যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে নিত্যপণ্য। সমান্তরালে বাড়ছে মূল্যসূচক। আড়ত থেকে খুচরা বাজার সব জায়গায় রয়েছে পেঁয়াজ। তারমধ্যে পাঁচ মাস পর ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।
আর আলুর তো আমদানিরও প্রয়োজন নেই। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন হয়েছে বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরে আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৯ লাখ ৬৩ হাজার টন। তাতেও কমছে না দাম।
বিক্রেতারা বলেন, যতদিন যাইতেছে আলুর দাম বাড়তেছে। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি আর এখন ৫০ টাকা। সকল সবজিতে মোটামুটি ১০-২০ টাকা বাড়ছে।
অসময়ে লাগামছাড়া প্রোটিনও। সব ধরনের মুরগির মাংসের দাম বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। ডিমের ডজন তো বড় কদমে দেড়শ ছাড়াল। সপ্তাহখানেক আগেও যেটি ২০ টাকা কমে পাওয়া যেত।
সংশ্লিষ্ট তথ্য বলছে, দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় চার কোটি। যার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাড়ে চার কোটি ডিম। তবে খামারিরা ১ টাকা লাভে সাড়ে ৯ টাকা দরে ডিম বিক্রি করলেও রাজধানীর বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকা দরে। বাড়তি এই ৩ টাকা যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।
বেশিরভাগ সবজি ও মশলার দামও লাগামছাড়া। সমতা নেই উৎপাদন খরচ ও বিক্রি মূল্যে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দৈনিক বাজার তালিকার অর্ধেকের বেশি পণ্যের দাম বেড়েছে শেষ ১০ দিনে। তাতে ছোট পরিবারের ১ সপ্তাহের বাজার খরচ বেড়েছে ৪০০-৫০০ টাকা।
ক্রেতারা বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় দাম ডাবল হয়েছে। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী বাজার করি। জিনিসের যে দাম তাতে আমাদের নাভিশ্বাস অবস্থা। প্রয়োজন মতো বাজার করতে পারি না। প্রতিদিন কিছু আইটেম বাদ দিতে হয় ফর্দ থেকে।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, 'বাজার মনিটরিংটা নিয়মিত হচ্ছে না। ভোক্তা অধিকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপর হতে হবে। গুদামগুলোতে অতিরিক্ত মজুদ করেছে কিনা তা দেখতে হবে।'
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২১, ২২ ও ২৩ সালের এ সময়ের চেয়ে ২০২৪ এ সবজির দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।