আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অর্থপাচার করলে কোন ছাড় দেয়া হবে না। দূর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল আছে। তিনি আজ শনিবার (১৮ই মে) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিং-এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার কারণে।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভারত বিরোধিতা না করে এখন মধ্যপন্থা অবলম্বনের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপির সামনে কোন ইস্যু না থাকায় গণ অভ্যুত্থান থেকে লিফলেট বিতরণের মধ্যে নেমে এসেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'দেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী রয়েছে। সংসদে সরকারের সমালোচনা করছেন বিরোধী দল ও সংসদের বাইরেও সবাই সমালোচনা করছে। গণতন্ত্র আছে বলেই সবাই সমালোচনা করতে পারছে। বিএনপি যখন যেখানে সমাবেশ করতে চাচ্ছে বিনা বাধায় তা করতে পারছে। পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী।'
দেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসায় সরকার উদ্বিগ্ন কি না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কে বললো আপনাকে ১৩ বিলিয়ন ডলার? তখন সাংবাদিকরা বলেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরই বলেছেন ব্যবহার করার মতো ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে।
তখন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাহলে গভর্নর কে জিজ্ঞেস করুন যে কি কারণে এইটা এই পর্যায়ে এলো? আমরা তো এটা জানি না, আমরা জানি ১৯ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার, এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
সাংবাদিকদেরবাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে দেয়া হয় না, গভর্নরকে প্রশ্ন করা হবে কীভাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে? কোন দেশে? ভারতের ফেডারেল ব্যাংকে কি অবাধে ঢুকতে পারছে কেউ? কেন ঢুকবে? সব ওয়েবসাইটে আছে। আপনার জানবার বিষয়, আপনি ভেতরে ঢুকবেন কেন?
রিজার্ভ কমে ১৩ বিলিয়নে নেমে আসায় অর্থনীতিবিদরা অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কয় বিলিয়ন ডলার নিয়ে আমরা স্বাধীনতার পর যাত্রা শুরু করেছি। ডলার ছিল আমাদের? বিএনপি কয় বিলিয়ন ডলার রেখে গেছে আমাদের? তিন বিলিয়ন প্লাস। তাহলে এখন ১৯-২০ বিলিয়ন ডলার আছে এটা কি কম নাকি? এখন আমাদের রপ্তানি আয় বাড়ছে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে, এগুলো বাড়লে রিজার্ভও বাড়বে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ হয়েছে সরকারের ধারাবাহিকতায় এবং স্থায়িত্বতার কারণে। এই কারণে বিশ্বের বিস্ময়ে রূপান্তরিত হতে পেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশ তার হারিয়ে ফেলা জয় বাংলা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসহ সবকিছু পুনরুদ্ধার করেছে। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে শৃঙ্খলিত গণতন্ত্রকে মুক্ত করেন, ছুটে বেড়ান সারাদেশে।
তিনি বলেন ধারাবাহিকতার সরকারের কারণে আজ বাংলাদেশে উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্ভব হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ খুনের আসামীকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছিলো জিয়াউর রহমান।
কাদের আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই। কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমন-পীড়ন করছে না সরকার। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের বহু দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।